ঢাকা   শুক্রবার ৩০ মে ২০২৫, ১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

তেল সাম্রাজ্যে কাঁপন ধরানো সাংবাদিক—ইডা টারবেলের গল্প

নারী ও নারী উদ্যোক্তা

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২০:২৩, ২৮ মে ২০২৫

তেল সাম্রাজ্যে কাঁপন ধরানো সাংবাদিক—ইডা টারবেলের গল্প

 

১৯ শতকে আমেরিকার তেল বাজারে ছিল একচেটিয়া আধিপত্য। রকফেলারদের স্ট্যান্ডার্ড অয়েল কোম্পানি নিয়ন্ত্রণ করত বিশ্বের প্রায় ৯০ শতাংশ তেল ব্যবসা। সেই দুর্ভেদ্য সাম্রাজ্যের অন্ধকার দিক উন্মোচন করে কাঁপন তুলেছিলেন এক নারী—ইডা টারবেল। তার অনুসন্ধানী প্রতিবেদনই প্রথমবার জনসমক্ষে তুলে ধরে এই তেল সাম্রাজ্যের লুকানো দুর্নীতির চিত্র।

১৮৫৭ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়ার এরি কাউন্টিতে জন্মগ্রহণ করেন ইডা। তার বাবা ছিলেন একজন ক্ষুদ্র তেল উৎপাদনকারী। ১৪ বছর বয়সে তিনি প্রত্যক্ষ করেন ১৮৭২ সালের ক্লিভল্যান্ড তেলযুদ্ধ, যেখানে স্ট্যান্ডার্ড অয়েলের আগ্রাসী কৌশলে ইডার বাবাসহ বহু ছোট তেল ব্যবসায়ী নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। সেই ক্ষতই ইডাকে পরিণত বয়সে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতায় টেনে আনে।

১৯০২ সালে তিনি স্ট্যান্ডার্ড অয়েলের গোপন কর্মকাণ্ড নিয়ে অনুসন্ধান শুরু করেন। রেলপথ কোম্পানিগুলোর সঙ্গে রকফেলারদের অসাধু আঁতাত, বাজার দখলের পেছনের ষড়যন্ত্র—সবই উঠে আসে ইডার লেখায়। ১৯০২ থেকে ১৯০৪ সাল পর্যন্ত ‘ম্যাকক্লুর’স ম্যাগাজিন’-এ ১৯ পর্বে প্রকাশিত হয় তার প্রতিবেদন। পরে তা “The History of the Standard Oil Company” নামে দুই খণ্ডের বই হিসেবে প্রকাশিত হয়। এই বই মার্কিন অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার ইতিহাসে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করে।

তবে ইডার প্রতিভা শুধু এখানেই থেমে থাকেনি। তিনি নেপোলিয়ন বোনাপার্ট ও আব্রাহাম লিংকনের জীবনীও লেখেন। ১৮৯০ সালে প্যারিসে গিয়ে ফরাসি বিপ্লবে নারীদের ভূমিকা নিয়ে লেখেন প্রবন্ধ সিরিজ।

তেল সাম্রাজ্যের একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রকদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে সত্য প্রকাশে যিনি ভয় পাননি, সেই ইডা টারবেল আজও অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার অনুপ্রেরণার প্রতীক।