
শৈশব থেকেই অবসেসিভ কমপালসিভ ডিজঅর্ডারে (ওসিডি) আক্রান্ত ইরানি-মিসরীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন তরুণ ক্যামেরুন মোফিড ভ্রমণের মাধ্যমে খুঁজে পেলেন মানসিক প্রশান্তি। এই সমস্যার কারণে জীবনে নানা চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হওয়া মোফিড একসময় বুঝতে পারলেন, পৃথিবীর সব দেশ ঘোরা তাঁর মানসিক শান্তি খুঁজে পাওয়ার একটি উপায় হতে পারে।
মাত্র ২০ বছর বয়সে তিনি লক্ষ্য স্থির করলেন বিশ্বের প্রতিটি দেশে ভ্রমণ করবেন। এর আগে বিভিন্ন খেলাধুলা এবং পড়াশোনার ফাঁকে শতাধিক দেশে ভ্রমণের অভিজ্ঞতা ছিল তাঁর। নতুন লক্ষ্যপূরণে একটি ইভেন্ট মার্কেটিং কোম্পানি চালু করলেন এবং খরচ কমানোর পরিকল্পনা করে ২০২২ সালের শেষ দিকে একটি ব্যাগ কাঁধে নিয়ে শুরু করলেন তাঁর অভিযান।
প্রতিটি দেশে অন্তত চার দিন অবস্থান, স্থানীয় মানুষের সঙ্গে মেশা এবং গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক ও ভূগোলিক স্থানে ভ্রমণ করে যাত্রাটিকে অর্থবহ করে তুললেন মোফিড। ভ্রমণকালীন সময়ে একাকীত্ব, অসুস্থতা, হতাশা এবং শারীরিক পরিশ্রমে অনেকবার বিপর্যস্ত হলেও তিনি থেমে থাকেননি। বরং অনেক দেশে সাধারণ মানুষের আতিথেয়তা তাঁকে মুগ্ধ করেছে এবং নতুন নতুন বন্ধুত্বের জন্ম দিয়েছে।
অবশেষে, ২৫ বছর বয়সে উত্তর কোরিয়ার পিয়ংইয়ংয়ে আন্তর্জাতিক ম্যারাথনে অংশ নিয়ে পৃথিবীর ১৯৫টি স্বীকৃত দেশে ভ্রমণের মাইলফলক স্পর্শ করেন তিনি এবং গড়েন নতুন একটি বিশ্বরেকর্ড। যদিও তা অল্প সময় পর ভাঙা হয়েছে, কিন্তু মোফিডের জীবন বদলে গেছে চিরতরে। এখন তিনি অনেকটা মুক্ত, আত্মবিশ্বাসী এবং জীবনে অনিশ্চয়তাকে ভয় না পেয়ে তা মোকাবিলায় প্রস্তুত।
একসময় যে রোগ তাঁর চিন্তা নিয়ন্ত্রণ করত, সেই রোগকে এখন তিনি নিয়ন্ত্রণ করতে শিখেছেন। তাঁর মতে, ভ্রমণ তাঁকে আত্মবিশ্বাসী করেছে এবং শেখিয়েছে যে অনিশ্চয়তার মধ্যেও শান্তি খুঁজে পাওয়া সম্ভব। এ যাত্রায় পৃথিবীজুড়ে নানা সংস্কৃতি এবং মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত মানুষের সঙ্গে মেশা তাঁর নতুন অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছে।
(সূত্র: সিএনএন)