
আন্দোলনের অষ্টম দিনে সহিংসতা চরমে পৌঁছেছে আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকে। বৃহস্পতিবার (০৭ আগস্ট) বিকেল সোয়া ৪টার দিকে চাকুরিচ্যুতদের হামলায় ব্যাংকের মানবসম্পদ প্রধান (এইচআর হেড) আমির হোসেনসহ অন্তত ১৫ জন কর্মকর্তা ও কর্মচারী আহত হয়েছেন। দৈনিক বাংলা মোড় এলাকায় অবস্থিত ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে ঘটে যাওয়া এই সহিংস ঘটনায় চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
গুরুতর আহতদের মধ্যে একজন সিকিউরিটি গার্ডকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে, আর এইচআর হেড আমির হোসেন চিকিৎসাধীন স্কয়ার হাসপাতালে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশকে হস্তক্ষেপ করতে হয় এবং তারা ব্যাংকের তিনজন ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টরকে (ডিএমডি) নিরাপদে সরিয়ে নেয়।
অভিযোগ পাওয়া গেছে, আন্দোলনকারীরা আধিপত্য বিস্তারের নামে গত ৮ কার্যদিবস ধরে প্রধান কার্যালয় অবরুদ্ধ করে রাখে। কাউকে কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না বলে, গুরুত্বপূর্ণ কাজ করার জন্য কর্মীদের পার্শ্ববর্তী সুরমা টাওয়ারে সরিয়ে বসানো হয়েছিল। বিকেলের সময় ওই টাওয়ার থেকে গাড়িতে উঠার সময় হামলা চালানো হয়। কয়েকশো লাঠিধারী হামলাকারী গাড়ি ঘিরে বাধা দেয়, হাত-পা ভেঙে ফেলে। ব্যাংকের সিকিউরিটি বাহিনী তাঁদের উদ্ধার করতে এলে দলবদ্ধ হামলা চালানো হয়।
পল্টন থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। পুলিশ কোনো রকম শক্তি প্রয়োগ না করলেও ঘন্টা ধরে পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করছে; হামলাকারীদের গতিবিধি ও অবস্থানে নজরদারি হচ্ছে।
ভুক্তভোগী এক কর্মকর্তা বলেন, চাকুরিচ্যুতরা আমাদের কাউকে অফিস করতে দিচ্ছে না, বল প্রয়োগ করে ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। তারা সৎ কর্মীদের কর্মস্থলকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে। নিয়মবিরোধী আন্দোলন, যা হয়তো সহনীয় ছিল—এটি কিন্তু গুরুতর অপরাধের পর্যায়ে চলে গেছে। এই অবস্থা অব্যাহত থাকলে হাজারো কর্মীর ক্ষতির আশঙ্কা আছে।
ব্যাংকটির অতীত নিয়োগ অনিয়ম—দাপ্তরিক নিয়ম না মেনে প্রার্থী নির্বাচন, অতিরিক্ত নিয়োগ এবং ৬ শতাধিক কর্মকর্তার নিয়োগ সরাসরি চেয়ারম্যানের অফিস থেকে হওয়া—সহ নানা দুর্নীতি আলোচিত। পরে বাংলাদেশ ব্যাংক ও অন্যান্য তদারকি সংস্থা তদন্ত শুরু করায় ১ হাজার ৪১৪ জন কর্মকর্তার মূল্যায়ন করা হয়। ৫৪৭ জনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে, বাকিদেরকে নিয়মিত করা হয়েছে।