
শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত দেশের সবচেয়ে বড় মোবাইল অপারেটর গ্রামীণফোনের বিরুদ্ধে 'প্রিডেটরি প্রাইসিং' এবং অতিরিক্ত ভর্তুকির মাধ্যমে বাজার আধিপত্যের অপব্যবহারের অভিযোগের তদন্ত শুরু করেছে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন (বিসিসি)। গ্রামীণফোনের প্রতিযোগী শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত আরেক কোম্পানি রবি আজিয়াটা পিএলসি এই অভিযোগটি দায়ের করেছে।
চলতি বছরের ২১শে জানুয়ারি বিসিসি-তে রবির দায়ের করা অভিযোগে বলা হয়, গ্রামীণফোনের ব্যবসায়িক কার্যক্রম প্রতিযোগিতা আইন ২০১২-এর লঙ্ঘন। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, কমিশন বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণ করেছে এবং এর শুনানি চলছে।
রবির অভিযোগ অনুযায়ী, গ্রামীণফোন তার 'সিগনিফিক্যান্ট মার্কেট পাওয়ার' (SMP) ব্যবহার করে সিম কার্ড উৎপাদন খরচের চেয়েও কম দামে বিক্রি করছে। রবি'র দাবি, গ্রামীণফোনের এই কৌশল অনুসরণ করা ছোট অপারেটরদের পক্ষে সম্ভব নয়, যার ফলে বাজারে ন্যায্য প্রতিযোগিতা ব্যাহত হচ্ছে।
রবির অভিযোগ, "গ্রামীণফোনের এই আচরণ নতুন প্রতিদ্বন্দ্বীদের টিকে থাকা কঠিন করে তোলে, ভোক্তাদের পছন্দ সীমিত করে এবং টেলিকম খাতের উদ্ভাবনকে বাধাগ্রস্ত করে।" রবি আরও জানায়, ২০২৩ সালে গ্রামীণফোনের মুনাফা ছিল ৩,৩১০ কোটি টাকা, যা রবির চেয়ে দশ গুণেরও বেশি। এই বিপুল মুনাফার কারণে গ্রামীণফোন আগ্রাসীভাবে ভর্তুকি দিতে সক্ষম।
তবে গ্রামীণফোন তাদের বিরুদ্ধে আনা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তারা জানায়, তাদের সিম কার্ডের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য (এমআরপি) ৩৫০ টাকা, যা তারা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছে এবং তারা কখনই উৎপাদন খরচের নিচে সিম বিক্রি করে না। তারা স্বীকার করেছে, খুচরা বিক্রেতারা মাঝে মাঝে নিজেদের উদ্যোগে ছাড় দিয়ে থাকে।
গ্রামীণফোন বলছে, তাদের ব্যবসায়িক কার্যক্রম পুরোপুরি আইন মেনেই পরিচালিত হচ্ছে এবং তাদের নীতিগুলো বাজারে উদ্ভাবন ও ভোক্তাদের পছন্দ বাড়াতে সাহায্য করেছে। কোম্পানিটি মনে করে, তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো ভিত্তিহীন।
এই মামলার সর্বশেষ শুনানি গত ৫ মে অনুষ্ঠিত হয়েছে, যেখানে গ্রামীণফোন একটি আনুষ্ঠানিক আবেদন জমা দিয়েছে। একই ধরনের একটি অভিযোগ সম্প্রতি বাংলালিংকও গ্রামীণফোনের বিরুদ্ধে দায়ের করেছে বলে জানা গেছে।