
শেয়ারবাজারে কারসাজি, প্রতারণা ও মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক ও সাবেক সংসদ সদস্য সাকিব আল হাসানসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে করা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ২১ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেছেন ঢাকার একটি আদালত। বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন গালিব মামলার এজহার গ্রহণ করে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার এ তারিখ নির্ধারণ করেন।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন—সমবায় অধিদপ্তরের সাবেক উপনিবন্ধক মো. আবুল খায়ের (হিরু) ও তার স্ত্রী কাজী সাদিয়া হাসান, আবুল কালাম মাদবর, কনিকা আফরোজ, মো. বাশার, সাজেদ মাদবর, আলেয়া বেগম, কাজী ফুয়াদ হাসান, কাজী ফরিদ হাসান, শিরিন আক্তার, জাভেদ এ মতিন, মো. জাহেদ কামাল, মো. হুমায়ুন কবির ও তানভির নিজাম।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আসামিরা নিজেদের স্বার্থে বিও অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে অবৈধ সিরিজ লেনদেন, প্রতারণামূলক ট্রেডিং, গেম্বলিং ও স্পেকুলেশনের মাধ্যমে শেয়ারবাজারে নির্দিষ্ট কিছু শেয়ারের দাম কৃত্রিমভাবে বাড়িয়ে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের প্রলুব্ধ করেন। এভাবে তারা বাজারে কারসাজি করে বিনিয়োগকারীদের বিপুল অর্থ হাতিয়ে নেন। অভিযোগ অনুযায়ী, তারা ২৫৬ কোটি ৯৭ লাখ ৭০ হাজার ৩০৪ টাকা আত্মসাৎ করেছেন, যা অপরাধলব্ধ অর্থ হিসেবে বিবেচিত। এর মধ্যে আবুল খায়ের (হিরু) তার স্ত্রীর সহায়তায় ২৯ কোটি ৯৪ লাখ ৪২ হাজার ১৮৫ টাকার উৎস গোপন করে বিভিন্ন খাতে স্থানান্তর করেন এবং তার নামে পরিচালিত ১৭টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ৫৪২ কোটি টাকার বেশি অস্বাভাবিক লেনদেনের প্রমাণ পাওয়া গেছে।
মামলার অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্স, ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স ও সোনালী পেপারস লিমিটেডের শেয়ার কারসাজির মাধ্যমে সাকিব আল হাসান বিনিয়োগ করে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ২ কোটি ৯৫ লাখ টাকার বেশি আত্মসাৎ করেন। মামলাটি দায়ের করেন দুদকের সহকারী পরিচালক সাজ্জাদ হোসেন, এবং এটি দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ১৯৪৭, দণ্ডবিধি ও মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের বিভিন্ন ধারায় নথিভুক্ত হয়েছে।
এই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন ২১ সেপ্টেম্বর দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যা দেশের শেয়ারবাজারে স্বচ্ছতা ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার প্রয়াসে এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হতে যাচ্ছে।