ঢাকা   রোববার ১৫ জুন ২০২৫, ৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

হাজার কোটি টাকার ক্লাবে ব্যাংকবহির্ভূত ৬ জায়ান্ট: শেয়ারবাজারে আস্থার নতুন দিগন্ত

শেয়ারবাজার

শেয়ারবিজনেস ডেস্ক

প্রকাশিত: ১০:২৬, ১৪ জুন ২০২৫

সর্বশেষ

হাজার কোটি টাকার ক্লাবে ব্যাংকবহির্ভূত ৬ জায়ান্ট: শেয়ারবাজারে আস্থার নতুন দিগন্ত

বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ৩৯৭টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে এক হাজার কোটি টাকার বেশি পরিশোধিত মূলধন রয়েছে এমন কোম্পানির সংখ্যা মাত্র ৩১টি, যা 'হাজার কোটি ক্লাব' নামে পরিচিত। এই ৩১টির মধ্যে ২৫টি কোম্পানিই ব্যাংক খাতের। বাকি ৬টি হলো ব্যাংকবহির্ভূত বিভিন্ন খাতের উল্লেখযোগ্য কোম্পানি—বেস্ট হোল্ডিং, কেয়া কসমেটিকস, গ্রামীণফোন, রবি আজিয়াটা, লাফার্জহোলসিম এবং সামিট পাওয়ার। এই মেগা শেয়ারগুলো দেশের শেয়ারবাজারের স্থিতিশীলতা ও গভীরতার গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত বহন করে।

মূলধন ও ডিভিডেন্ডের চিত্র

এই ৬টি কোম্পানির মধ্যে রবি আজিয়াটার পরিশোধিত মূলধন সবচেয়ে বেশি—৫ হাজার ২৩৭ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। এরপর রয়েছে গ্রামীণফোন (১ হাজার ৩৫০ কোটি ৩২ লাখ), লাফার্জহোলসিম (১ হাজার ১৬১ কোটি ৩৭ লাখ), কেয়া কসমেটিকস (১ হাজার ১০২ কোটি ৩২ লাখ), সামিট পাওয়ার (১ হাজার ৬৭ কোটি ৯০ লাখ) এবং বেস্ট হোল্ডিং (১ হাজার ৫৯ কোটি ২৩ লাখ টাকা)।

এই কোম্পানিগুলোর মধ্যে ৫টিই সর্বশেষ অর্থবছরের জন্য ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে, যা বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি ইতিবাচক বার্তা। সর্বোচ্চ ডিভিডেন্ড দিয়েছে গ্রামীণফোন৩৩০ শতাংশ ক্যাশ। এরপর লাফার্জহোলসিম ১৯ শতাংশ ক্যাশ, রবি আজিয়াটা ১৫ শতাংশ ক্যাশ এবং বেস্ট হোল্ডিংসামিট পাওয়ার ১০ শতাংশ করে ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে।

অন্যদিকে, কেয়া কসমেটিকস ২০২০ সালের পর থেকে আর কোনো ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেনি। ওই বছর কোম্পানিটি ২ শতাংশ ক্যাশ ও ১ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ড দিয়েছিল।

সর্বশেষ বাজার দর

এই কোম্পানিগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ দরে লেনদেন হচ্ছে গ্রামীণফোনের শেয়ার, সর্বশেষ দর ২৮৪ টাকা ৪০ পয়সা। এরপর রয়েছে লাফার্জহোলসিম (৪২ টাকা ৯০ পয়সা), রবি আজিয়াটা (২৩ টাকা ৮০ পয়সা), বেস্ট হোল্ডিং (১৪ টাকা ৭০ পয়সা), সামিট পাওয়ার (১৩ টাকা ৩০ পয়সা) এবং কেয়া কসমেটিকস (৪ টাকা ৭০ পয়সা)।

উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা

এই ৬টি বৃহৎ মূলধনী কোম্পানির মধ্যে একটি বাদে বাকি পাঁচটি কোম্পানি বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে একটি শক্তিশালী ও বৈচিত্র্যময় বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি করেছে। ব্যাংক খাতের বাইরে তাদের উপস্থিতি বাজারের গভীরতা বাড়াচ্ছে এবং বিনিয়োগকারীদের বিভিন্ন সেক্টরে বিনিয়োগের দ্বার খুলে দিচ্ছে।

তাদের নিয়মিত ডিভিডেন্ড ঘোষণা ও বৃহৎ মূলধন কাঠামো প্রমাণ করে যে এই কোম্পানিগুলো দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগের জন্য স্থিতিশীল এবং নির্ভরযোগ্য।

শেয়ারবাজারে এমন মেগা শেয়ারগুলোর উপস্থিতি বাজারকে আরও মজবুত করে তোলে। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়াতে এটি সহায়ক ভূমিকা রাখছে। এই কোম্পানিগুলো একদিকে দেশের শিল্পোন্নয়নে অবদান রাখছে, অন্যদিকে বিনিয়োগকারীদের জন্য টেকসই রিটার্নের পথ তৈরি করছে—যা বাংলাদেশের শেয়ারবাজারের ভবিষ্যতের জন্য অত্যন্ত ইতিবাচক দিক।

সর্বশেষ