
শেয়ারবাজারে ওষুধ ও রসায়ন খাতে তালিকাভুক্ত ৩৪টি কোম্পানির মধ্যে ২২টি কোম্পানির রিজার্ভ রয়েছে পরিশোধিত মূলধনের চেয়ে বেশি। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, এসব কোম্পানি তাদের নিয়মিত মুনাফার একটি উল্লেখযোগ্য অংশ ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে, যা ভবিষ্যতের বিনিয়োগ, সম্প্রসারণ ও আর্থিক স্থিতিশীলতার দিক থেকে ইতিবাচক ইঙ্গিত দেয়।
অন্যদিকে, খাতটির ৮টি কোম্পানির রিজার্ভ পরিশোধিত মূলধনের চেয়ে কম এবং বাকি ৪টি কোম্পানির রিজার্ভ নেতিবাচক অবস্থানে রয়েছে।
মূলধনের তুলনায় বেশি রিজার্ভধারী ২২ কোম্পানি:
১. এসিআই লিমিটেড – পরিশোধিত মূলধন ৮৭.৬৩ কোটি টাকা, রিজার্ভ ৪৮৩.৫৪ কোটি টাকা।
২. এসিআই ফর্মুলেশন – মূলধন ৪৭.২৫ কোটি, রিজার্ভ ২৭৮.৫২ কোটি টাকা।
৩. একমি ল্যাবরেটরিজ – মূলধন ২১১.৬০ কোটি, রিজার্ভ ১,৭৮০.৯৫ কোটি টাকা।
৪. একটিভ ফাইন কেমিক্যাল – মূলধন ২৩৯.৯৩ কোটি, রিজার্ভ ১৯০.৯৯ কোটি টাকা।
৫. এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ – মূলধন ১২২ কোটি, রিজার্ভ ৪৬৩.২৫ কোটি টাকা।
৬. বীকন ফার্মা – মূলধন ২৩১ কোটি, রিজার্ভ ৩৭৮.১১ কোটি টাকা।
৭. বেক্সিমকো ফার্মা – মূলধন ৪৪৬ কোটি, রিজার্ভ ৩,৮২১.৯৪ কোটি টাকা।
৮. গ্লোবাল হেভি কেমিকেল – মূলধন ৭২ কোটি, রিজার্ভ ১৬৪.১৯ কোটি টাকা।
৯. ইবনে সিনা – মূলধন ৩১.২৪ কোটি, রিজার্ভ ৩১৭.৮৭ কোটি টাকা।
১০. জেএমআই হসপিটাল – মূলধন ১২৫.২৯ কোটি, রিজার্ভ ১৭৯.৫৬ কোটি টাকা।
১১. জেএমআই সিরিঞ্জ – মূলধন ৩০.০৫ কোটি, রিজার্ভ ৫৯.৫৮ কোটি টাকা।
১২. লিব্রা ইনফিউশন – মূলধন ২.২৫ কোটি, রিজার্ভ ১৮৭.১৩ কোটি টাকা।
১৩. কোহিনুর কেমিক্যাল – মূলধন ৩৭.০৭ কোটি, রিজার্ভ ১৮৫.৭৪ কোটি টাকা।
১৪. ম্যারিকো বাংলাদেশ – মূলধন ৩১.৫০ কোটি, রিজার্ভ ৭৬২.৫৬ কোটি টাকা।
১৫. নাভানা ফার্মা – মূলধন ১০৭.৪১ কোটি, রিজার্ভ ৩১১.৫১ কোটি টাকা।
১৬. ওরিয়ন ফার্মা – মূলধন ২৩৪ কোটি, রিজার্ভ ১,০৫৫.৫৪ কোটি টাকা।
১৭. ফার্মা এইড – মূলধন ৩.১২ কোটি, রিজার্ভ ৩১.১৭ কোটি টাকা।
১৮. রেকিট বেনকিজার – মূলধন ৪.৭২ কোটি, রিজার্ভ ১৬৩.৮৯ কোটি টাকা।
১৯. রেনাটা লিমিটেড – মূলধন ১,১১৪.৬৯ কোটি, রিজার্ভ ৩,২৭২.১৪ কোটি টাকা।
২০. সিলকো ফার্মা – মূলধন ১০৩.৮০ কোটি, রিজার্ভ ১৩১.৪৪ কোটি টাকা।
২১. স্কয়ার ফার্মা – মূলধন ৮৮৬.৪৫ কোটি, রিজার্ভ ১১,৫০১.৯৩ কোটি টাকা।
২২. টেকনো ড্রাগ – মূলধন ১৩১.৭৭ কোটি, রিজার্ভ ১৯৫.১৪ কোটি টাকা।
বিশ্লেষণ:
ওষুধ ও রসায়ন খাতের অধিকাংশ কোম্পানির রিজার্ভ পরিশোধিত মূলধনের তুলনায় বেশি হওয়া একটি সুদৃঢ় আর্থিক ভিত্তিকে নির্দেশ করে। এ ধরনের রিজার্ভ কেবল কোম্পানিগুলোর আয় ও লাভজনকতা নয়, বরং তাদের টেকসই প্রবৃদ্ধি এবং ভবিষ্যতের ঝুঁকি মোকাবিলার সক্ষমতার দিকেও ইঙ্গিত দেয়। যেমন, স্কয়ার ফার্মার বিশাল রিজার্ভ (১১,৫০১.৯৩ কোটি টাকা) বা বেক্সিমকো ফার্মার (৩,৮২১.৯৪ কোটি টাকা) রিজার্ভ কোম্পানিগুলোর দীর্ঘমেয়াদি আর্থিক স্থিতিশীলতা এবং বিনিয়োগযোগ্যতা স্পষ্ট করে তোলে।
এছাড়া রেনাটা, একমি, ওরিয়ন এবং ম্যারিকোসহ অন্যান্য কোম্পানিগুলোও শক্তিশালী রিজার্ভের কারণে বাজারে প্রতিযোগিতায় ভালো অবস্থানে রয়েছে। এটি বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধির পাশাপাশি ভবিষ্যতে লভ্যাংশ প্রদানের ধারাবাহিকতাও বজায় রাখতে সহায়ক হতে পারে।