ঢাকা   সোমবার ১৯ মে ২০২৫, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

খাদ্য খাতে আয়ের ভাটায় পড়েছে ১৩ কোম্পানি, কেবল ৪টির প্রবৃদ্ধি

শেয়ারবাজার

শেয়ারবিজনেস ডেস্ক

প্রকাশিত: ১০:৪৭, ১৮ মে ২০২৫

খাদ্য খাতে আয়ের ভাটায় পড়েছে ১৩ কোম্পানি, কেবল ৪টির প্রবৃদ্ধি

২০২৫ সালের জানুয়ারি-মার্চ সময়ের তৃতীয় প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন বলছে, শেয়ারবাজারে খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের অধিকাংশ কোম্পানির আয় কমে গেছে। ডিএসইর সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, এই খাতে তালিকাভুক্ত ২১টি কোম্পানির মধ্যে ১৭টির ইপিএস (প্রতি শেয়ার আয়) প্রকাশ পেয়েছে। এর মধ্যে ১৩টি কোম্পানির আয় হ্রাস পেয়েছে, যা খাতটির সার্বিক দুর্বল অবস্থানকে তুলে ধরছে।

বিশ্লেষকদের মতে, চলমান অর্থনৈতিক চাপে খাতটির কোম্পানিগুলো কার্যকরভাবে উৎপাদন ও বিক্রয় ধরে রাখতে পারছে না। কাঁচামালের দামে ঊর্ধ্বগতি, চাহিদার ঘাটতি এবং উৎপাদন ব্যয়ের চাপ এই অবনতির প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে।

উদাহরণস্বরূপ, এএমসিএল-প্রাণের ইপিএস ১ টাকা ৪৬ পয়সা থেকে কমে হয়েছে ১ টাকা ৩৭ পয়সা। অ্যাপেক্স ফুডসের আয় ১ টাকা ৪৯ পয়সা থেকে নেমে এসেছে ১ টাকায়। ফু-ওয়াং ফুডস তো এবার লোকসানে চলে গেছে—যেখানে আগের বছর ১ পয়সা লাভ ছিল, এবার হয়েছে ৮ পয়সা লোকসান। একইভাবে, জেমিনি সী ফুড, শ্যামপুর সুগার মিলস, জিলবাংলা সুগার মিলসের মতো কোম্পানিগুলোর লোকসান উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়েছে।

জেমিনি সী ফুডের তৃতীয় প্রান্তিকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বছর যেখানে ২ টাকা ১৭ পয়সা লাভ হয়েছিল, এবার সেখানে ১ টাকা ৩৬ পয়সা লোকসান হয়েছে। শ্যামপুর সুগার মিলসের লোকসান ১০ টাকা ৬৭ পয়সা থেকে বেড়ে ১৪ টাকা ৯৬ পয়সায় পৌঁছেছে। জিলবাংলা সুগারের ক্ষতিও লক্ষণীয়ভাবে কমেছে, তবে এখনও বড় অঙ্কের লোকসান রয়েছে।

তবে এই নেতিবাচক চিত্রের মাঝেও চারটি কোম্পানি কিছুটা আলোর বার্তা দিয়েছে। অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ, বীচ হ্যাচারি, বঙ্গজ ও ফাইন ফুডস—এই চার কোম্পানির ইপিএস বেড়েছে। বিশেষ করে বীচ হ্যাচারির ইপিএস ৬০ পয়সা থেকে বেড়ে ১ টাকা ৮৮ পয়সা হয়েছে, যা প্রবৃদ্ধির একটি ভালো উদাহরণ। ফাইন ফুডসের ইপিএস ১৮ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ২ টাকা ৩১ পয়সা, যা উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি।

সব মিলিয়ে, খাদ্য খাতের এই মিশ্র চিত্র শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের জন্য একদিকে যেমন উদ্বেগের, অন্যদিকে কিছু কোম্পানির প্রবৃদ্ধি ভবিষ্যতের সম্ভাবনার ইঙ্গিতও দেয়। খাতটিকে টেকসই করতে হলে অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কাঠামোগত পদক্ষেপ প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।