ঢাকা   শনিবার ০৫ জুলাই ২০২৫, ২০ আষাঢ় ১৪৩২

জাকারবার্গের বিতর্কিত সিদ্ধান্তই আজ মেটার টার্নিং পয়েন্ট!

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২১:৫৩, ৪ জুলাই ২০২৫

সর্বশেষ

জাকারবার্গের বিতর্কিত সিদ্ধান্তই আজ মেটার টার্নিং পয়েন্ট!

২০১২ সালে ফেসবুককে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত করার প্রস্তুতি নেওয়ার সময় বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছিলেন মেটার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মার্ক জাকারবার্গ। সে সময় কম্পিউটারের বদলে স্মার্টফোনে ইন্টারনেট ব্যবহার জনপ্রিয় হতে শুরু করায় অনেকেই আশঙ্কা করেছিলেন, নতুন পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মেলাতে না পারলে ফেসবুকের ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে পড়বে। ঠিক তখনই জাকারবার্গের নজরে পড়ে ইনস্টাগ্রাম অ্যাপ। সেসময় ইনস্টাগ্রাম অ্যাপ শুধু আইফোনে ব্যবহার করা যেত। আর তাই দুই বছর আগে চালু হলেও কোনো আয় করতে পারছিল না ইনস্টাগ্রাম কর্তৃপক্ষ। কর্মিসংখ্যাও ছিল বেশ কম, মাত্র ১৩ জন। এরপরও ইনস্টাগ্রাম অ্যাপে নতুন সম্ভাবনা খুঁজে পান জাকারবার্গ।

ইনস্টাগ্রাম অ্যাপের ভবিষ্যৎ পর্যালোচনার পর জাকারবার্গ সরাসরি ইনস্টাগ্রামের সহপ্রতিষ্ঠাতা কেভিন সিসট্রমের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এরপর কোনো কর্মকর্তা বা আইনজীবীর মধ্যস্থতা ছাড়াই ২০১২ সালের এপ্রিল মাসে ১০০ কোটি মার্কিন ডলারে ইনস্টাগ্রাম কিনে নেয় ফেসবুক। ইনস্টাগ্রাম কেনার ঘোষণা প্রচারের পরপরই প্রযুক্তি বিশ্লেষক ও বিনিয়োগকারীদের অনেকে জাকারবার্গের নেওয়া সিদ্ধান্তকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ ও ‘অপরিণামদর্শী’ আখ্যা দিয়েছিলেন। একটি ছোট প্রতিষ্ঠানকে বিপুল অর্থের বিনিময়ে কেনার যৌক্তিকতা নিয়েও সন্দিহান ছিলেন তাঁরা। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে প্রমাণ হয়েছে, ইনস্টাগ্রাম কেনার সিদ্ধান্ত ছিল জাকারবার্গের দূরদর্শিতার সেরা উদাহরণ। চুক্তির কিছুদিনের মধ্যেই ইনস্টাগ্রাম চালু করে অ্যান্ড্রয়েড সংস্করণ। প্রথম দিনেই অ্যাপটি ১০ লাখ বার ডাউনলোড করা হয়, যা তখনকার মানদণ্ডে ছিল অভাবনীয় সাফল্য।
জাকারবার্গের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত ছিল ইনস্টাগ্রামের স্বতন্ত্রতা ধরে রাখা। অধিগ্রহণের পরও কেভিন সিসট্রমকে প্রতিষ্ঠানটির নেতৃত্বে থাকতে দেন জাকারবার্গ। এতে ইনস্টাগ্রামের নিজস্বতা অটুট থাকে, যা অ্যাপটির জনপ্রিয়তা ধরে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। ফলে ইনস্টাগ্রাম পরিণত হয় একটি বড় মাধ্যমে, যেখানে সাধারণ ব্যবহারকারীরাও হয়ে উঠেছেন কনটেন্ট নির্মাতা, ইনফ্লুয়েন্সার এবং উদ্যোক্তা।

বর্তমানে প্রতি মাসে ইনস্টাগ্রামের সক্রিয় ব্যবহারকারীর সংখ্যা ২০০ কোটিরও বেশি। ব্যবহারকারীর দিক থেকে এটি বর্তমানে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। মেটার সামগ্রিক বিজ্ঞাপন আয়ে ইনস্টাগ্রামের অবদানও উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। ২০২৪ সালে মেটার মোট বিজ্ঞাপনী আয়ের প্রায় ৪১.৪৯ শতাংশই এসেছে ইনস্টাগ্রাম থেকে। ২০২৫ সালে এই হার বেড়ে ৪৯ দশমিক ৯ শতাংশে পৌঁছাতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সূত্র: নিউজ১৮

সর্বশেষ