
বিএনপির সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের লন্ডন বৈঠকের পর যৌথ সংবাদ সম্মেলন আয়োজনকে রাজনৈতিক সংস্কৃতির ব্যত্যয় বলে অভিহিত করেছে জামায়াতে ইসলামী। দলটির কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, এ ঘটনায় দেশের বাকি সব রাজনৈতিক দলই কিছুটা বিব্রত, আর এখানেই তাদের মূল আপত্তি।
আজ বুধবার জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের (এনসিসি) সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় পর্যায়ের তৃতীয় বৈঠকের বিরতিতে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এসব কথা বলেন তিনি। বিএনপির সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনের ঘটনায় সরকারের নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। তার ভাষায়, ‘কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সরকারের যৌথ সংবাদ সম্মেলন ইতিহাসের বিরল ঘটনা।’
তাহের জানান, এই ঘটনার কারণেই জামায়াতে ইসলামী দ্বিতীয় পর্যায়ের দ্বিতীয় বৈঠকে অংশ নেয়নি। তবে গতকাল প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস জামায়াতের আমিরের সঙ্গে কথা বলার পর তারা আবার আলোচনায় অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
তিনি বলেন, “আমরা কখনোই সরকারকে ব্যর্থ করতে চাই না বরং সহযোগিতা করতে চাই।” আলোচনায় জামায়াত এনসিসি গঠনের পক্ষে মত দিয়েছে। তবে এনসিসির কাঠামো ও ক্ষমতার পরিধি নিয়ে দলটির কিছু ভিন্নমত রয়েছে। জামায়াতের মতে, রাষ্ট্রপতি, প্রধান বিচারপতি ও তিন বাহিনীর প্রধানদের নিয়োগ এনসিসির আওতায় না রাখাই হবে যথাযথ।
গত ১৩ জুন লন্ডনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যে বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে যৌথ বিবৃতি ও সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে বলা হয়, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে।
এর প্রতিক্রিয়ায় জামায়াতের নির্বাহী পরিষদের বৈঠকে বলা হয়, একটি নির্দিষ্ট দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে যৌথ বিবৃতি ও সংবাদ সম্মেলন নৈতিকভাবে অনুচিত এবং এতে প্রধান উপদেষ্টার নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ন হয়েছে।
এদিকে এনসিসির একটি সূত্র জানায়, বিএনপি–ইউনূস বৈঠকের পর জামায়াত নিজেদের উপেক্ষিত মনে করে, তাই তারা দ্বিতীয় বৈঠকে অংশ নেয়নি। তবে প্রেস সচিব শফিকুল আলম গতকাল জানান, জামায়াতের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে এবং তারা আজকের বৈঠকে অংশ নেবে—এমনটাই আশা ছিল সরকারের।