
বৈরী আবহাওয়ার কারণে জাতীয় গ্রিড থেকে গ্যাস সরবরাহ হ্রাস পাওয়ায় চট্টগ্রামের নগরবাসী চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। পূর্বনির্দেশনা ছাড়াই হঠাৎ গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকায় সাধারণ মানুষ ক্ষুব্ধ। সকাল থেকেই গ্যাস না থাকায় রান্নাবান্না বন্ধ রয়েছে। এতে অনেকেই সকালের নাস্তা ও দুপুরের খাবারের জন্য বাধ্য হয়ে চায়ের দোকান ও হোটেলে ভিড় করছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) নগরের কাট্টলী, খুলশী, আগ্রাবাদ, হালিশহর, বহদ্দারহাট, চান্দগাঁও, মোহরা, বাকলিয়া, চকবাজার, মুরাদপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এতে এসব এলাকার বাসিন্দাদের দৈনন্দিন জীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
বাসিন্দারা জানান, সকাল ৭টার পর থেকে গ্যাসের চাপ এতটাই কমে যায় যে চুলা জ্বালানো প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। সকাল সাড়ে ৮টা থেকে ৯টার দিকে প্রায় সম্পূর্ণ গ্যাস বন্ধ হয়ে যায়। ফলে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো হোটেল থেকে খাবার কিনতে বাধ্য হচ্ছেন, যা তাদের জন্য অতিরিক্ত আর্থিক চাপ তৈরি করছে।
চান্দগাঁও আবাসিক এলাকার গৃহিণী ফাতেমা বেগম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “সকালে ঘুম থেকে উঠেই দেখি গ্যাস নেই। বাচ্চাদের স্কুলে টিফিন দিতে পারছি না, দুপুরেও রান্না করা সম্ভব হচ্ছে না। বাধ্য হয়ে হোটেল থেকে খাবার কিনে খাচ্ছি। কোনো ধরনের জানানো ছাড়াই হঠাৎ গ্যাস বন্ধ করাটা কোনো দেশের নিয়ম হতে পারে না।”
উত্তর কাট্টলী এলাকার বাসিন্দা মো. রহমান বলেন, “গ্যাস না থাকায় সকালে নাস্তা বানাতে পারিনি। নিরুপায় হয়ে বাইরে থেকে রুটি-ভাজি কিনতে হয়েছে। কেন বন্ধ, কখন আসবে কিছুই জানি না। দুপুরে যদি ভাত কিনতে হয়, তাহলে বাড়তি ৭০০ থেকে ১,০০০ টাকার ধাক্কা খেতে হবে।”
গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকার কারণ জানতে চাইলে কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (কেজিডিসিএল)-এর কর্মকর্তারা জানান, বৈরী আবহাওয়ার কারণে জাতীয় গ্রিড থেকে চট্টগ্রামে গ্যাস সরবরাহ কমে গেছে। এলএনজি টার্মিনাল থেকে সরবরাহ বিঘ্নিত হওয়ায় এই সংকট তৈরি হয়েছে।
কেজিডিসিএল-এর মহাব্যবস্থাপক (অপারেশন) প্রকৌশলী মাকসুদুর রহমান জানান, “জাতীয় গ্রিড থেকে প্রতিদিন চট্টগ্রামে প্রায় ৩০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের চাহিদা থাকলেও বর্তমানে ১৯০–২০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে। ফলে প্রায় ১০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের ঘাটতি দেখা দিয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি এবং সরবরাহ স্বাভাবিক করতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আবহাওয়ার উন্নতি সাপেক্ষে দুপুর ১টার মধ্যে সরবরাহ স্বাভাবিক হবে বলে আশা করছি।”