
বাংলাদেশ একসঙ্গে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) দুই কিস্তি—চতুর্থ ও পঞ্চম—বাবদ ১৩০ কোটি ডলার পেতে যাচ্ছে। বিষয়টি চূড়ান্ত হবে আগামী ২৩ জুন আইএমএফের নির্বাহী পর্ষদের বৈঠকে। শুক্রবার সংস্থাটির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এজেন্ডায় বাংলাদেশের জন্য চলমান ঋণ কর্মসূচির মূল্যায়ন সংক্রান্ত এ আলোচনার সময়সূচি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ওইদিনের বৈঠকে বাংলাদেশ সম্পর্কিত পর্যালোচনা প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হবে। অনুমোদন মিললে একসঙ্গে দুটি কিস্তির অর্থ ছাড় হবে। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে আইএমএফ বাংলাদেশকে সাড়ে তিন বছরের জন্য ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ কর্মসূচি অনুমোদন দেয়। এই ঋণের লক্ষ্য ছিল দেশের সামষ্টিক অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করা, ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীকে সুরক্ষা দেওয়া এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক, পরিবেশবান্ধব প্রবৃদ্ধি অর্জনে সহায়তা।
উল্লেখযোগ্যভাবে, এই কর্মসূচির অধীনে বাংলাদেশ এ পর্যন্ত তিন কিস্তিতে মোট ২৩১ কোটি ডলার পেয়েছে। এর মধ্যে ৪৭ কোটি ৬৩ লাখ ডলার প্রথম কিস্তি আসে ২০২৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি, দ্বিতীয় কিস্তি ৬৮ কোটি ১০ লাখ ডলার আসে ডিসেম্বরে এবং চলতি বছরের জুনে তৃতীয় কিস্তি হিসেবে ১১৫ কোটি ডলার ছাড় হয়। বাকি রয়েছে দুই কিস্তি মিলিয়ে ২৩৯ কোটি ডলার।
প্রথমে চতুর্থ কিস্তির অর্থ ডিসেম্বর ২০২৩-এর মধ্যে পাওয়ার কথা থাকলেও, বিনিময় হার বাজারভিত্তিক না হওয়ায় তা আটকে যায়। পরে সিদ্ধান্ত হয় চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তি একসঙ্গে ছাড় করা হবে। আইএমএফ প্রতিনিধি দল এপ্রিলে ঢাকা সফর করে এবং পরে ওয়াশিংটনের বসন্তকালীন বৈঠকে আলোচনা অগ্রসর হয়। মে মাসে বাংলাদেশ ব্যাংক একাধিক ভার্চুয়াল বৈঠকের পর ১২ মে চূড়ান্ত সমঝোতায় পৌঁছায়। এরপরই বাজারভিত্তিক বিনিময় হার চালু করে বাংলাদেশ, যা ছিল আইএমএফের অন্যতম প্রধান শর্ত।
আইএমএফ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, সবকিছু ঠিক থাকলে ঋণের অর্থ জুনেই ছাড় করা হবে। একই বিবৃতিতে তারা আরও জানায়, বাংলাদেশ অতিরিক্ত ৭৬ কোটি ডলার ঋণের আবেদন করেছে। অনুমোদন মিললে পুরো কর্মসূচির পরিমাণ দাঁড়াবে ৫৪০ কোটি ডলারে। পাশাপাশি আইএমএফ রাজস্ব আহরণ, ব্যাংক খাত সংস্কার ও বিনিময় হারের আরও সংস্কারেও জোর দিয়েছে।
মোট ৪৭০ কোটির এই প্যাকেজের মধ্যে ৩৩০ কোটি ডলার দেওয়া হচ্ছে ECF ও EFF এবং ১৪০ কোটি ডলার আসছে রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি ফ্যাসিলিটি (RSF) থেকে। উল্লেখযোগ্যভাবে, বাংলাদেশই এশিয়ার প্রথম দেশ হিসেবে RSF থেকে এই ঋণ পাচ্ছে।