ঢাকা   রোববার ০৪ মে ২০২৫, ২১ বৈশাখ ১৪৩২

রাইড শেয়ারিং চালকদের ‘শ্রমিক’ স্বীকৃতি ও সুরক্ষা নিশ্চিতে বড় সুপারিশ শ্রম সংস্কার কমিশনের

রাইড শেয়ারিং চালকদের ‘শ্রমিক’ স্বীকৃতি ও সুরক্ষা নিশ্চিতে বড় সুপারিশ শ্রম সংস্কার কমিশনের

দেশে গিগ বা রাইড শেয়ারিং অর্থনীতির চালকদের ‘শ্রমিক’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে তাঁদের ন্যায্য মজুরি, শ্রম অধিকার ও নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিতের সুপারিশ করেছে শ্রম সংস্কার কমিশন। সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জমা দেওয়া প্রতিবেদনে এসব গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, প্ল্যাটফর্মভিত্তিক খাতে যুক্ত দেশি-বিদেশি কোম্পানিগুলোর ওপর দায়বদ্ধতা আরোপ করে আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী শ্রমিক সুরক্ষা, সুনির্দিষ্ট নিরাপত্তাব্যবস্থা, একটি নিয়ন্ত্রক সংস্থা প্রতিষ্ঠা এবং সার্বক্ষণিক (২৪/৭) কল সেন্টার চালু করা জরুরি। পাশাপাশি চালকদের জন্য বিশেষ মজুরি কাঠামো নির্ধারণ ও কোম্পানির কমিশন হার যৌক্তিক পর্যায়ে নামিয়ে আনার প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশে রাইড শেয়ারিং কোম্পানির সংখ্যা বর্তমানে ১৫টি হলেও মূল বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে মাত্র তিনটি প্রতিষ্ঠান। চালকেরা দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ করে আসছেন—অতিরিক্ত কমিশন কেটে নেওয়ায় তাঁদের আয় ন্যূনতম পর্যায়ে নেমে এসেছে। ফলে অনেক সময় তাঁরা অ্যাপ এড়িয়ে সরাসরি যাত্রীদের সঙ্গে দর-কষাকষি করে ভাড়া নির্ধারণে বাধ্য হন।

অন্যদিকে যাত্রীরা অভিযোগ করছেন, খ্যাপে নেওয়া ভাড়া অ্যাপের ভাড়ার চেয়েও বেশি, চালকেরা যেখানে-সেখানে পার্কিং করেন, অনিচ্ছা সত্ত্বেও কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে যেতে অস্বীকৃতি জানান, এমনকি ফুটপাতে বাইক উঠিয়ে দেন। এসব অভিযোগের নিষ্পত্তির কার্যকর কোনো ব্যবস্থা না থাকায় ভোগান্তি বাড়ছে।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে সরকার ‘রাইড শেয়ারিং সার্ভিস নীতিমালা’ প্রণয়ন করলেও বাস্তবে তার প্রয়োগ প্রায় নেই বললেই চলে।

এদিকে কমিশন সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে নিয়োগ বন্ধ করে স্থায়ী জনবল কাঠামো হালনাগাদের সুপারিশ করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, দীর্ঘদিন ধরে কাজ করা আউটসোর্সিং শ্রমিকদের চাকরির নিরাপত্তা ও শ্রম অধিকার নিশ্চিত করে যোগ্যদের রাজস্ব খাতে স্থায়ীভাবে নিয়োগের ব্যবস্থা নিতে হবে।

এছাড়াও শ্রমিকদের সংগঠিত হওয়ার অধিকার, সিবিএ নির্বাচনে ভোটাধিকার এবং অভিযোগ নিষ্পত্তির আইনি কাঠামো প্রতিষ্ঠার সুপারিশ করেছে শ্রম সংস্কার কমিশন।