ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ একযোগে তিনটি সীমান্ত দিয়ে ৩০ জন বাংলাদেশিকে ঠেলে দেশে পাঠিয়েছে। সোমবার গভীর রাত ও মঙ্গলবার ভোরে ময়মনসিংহের ধোবাউড়া ও হালুয়াঘাট এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট সীমান্ত দিয়ে এই পুশইন করা হয়। পরে বিজিবি তাঁদের আটক করে হেফাজতে নেয়।
বিজিবির তথ্য অনুযায়ী, ধোবাউড়ার মুন্সিপাড়া সীমান্ত দিয়ে রাত তিনটার দিকে রসনাই গিরি বিএসএফ ক্যাম্প থেকে ১২ জনকে বাংলাদেশে পাঠানো হয়। তাঁদের মধ্যে তিনজন নারী, একজন শিশু এবং আটজন পুরুষ রয়েছেন। জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা জানান, খুলনা বিভাগের বাসিন্দা হয়ে ২০০৪ সালে কাজের সন্ধানে অবৈধভাবে ভারতের গুজরাটে যান এবং সেখানেই বসবাস করছিলেন।
আটকদের মধ্যে শরিফুল উল্লাহ নামে একজন বলেন, তিনি গুজরাটে একটি মুরগির দোকানে কাজ করতেন। ২৪ মে ভারতীয় পুলিশ তাঁদের আটক করে বিএসএফের কাছে হস্তান্তর করে। এরপর সীমান্তে এনে টাকা, মোবাইলসহ অন্যান্য জিনিস রেখে তাঁদের পুশইন করা হয়।
বিজিবির মুন্সিপাড়া ক্যাম্পের নায়েক সুবেদার খাইরুল ইসলাম বলেন, পুশইন করা ব্যক্তিরা বৈধ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করেই ভারতে গিয়েছিলেন। বর্তমানে তাঁদের পুলিশের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।
একই রাতে হালুয়াঘাট উপজেলার সূর্যপুর সীমান্ত দিয়ে আরও ১০ জন—যার মধ্যে ৯ নারী ও ১ শিশু—বাংলাদেশে ঠেলে পাঠানো হয়। ময়মনসিংহ ৩৯ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুহাম্মদ সানবীর হাসান মজুমদার জানান, তাঁরা সবাই বাংলাদেশি এবং দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে বিভিন্ন সময় ভারতে গিয়েছিলেন।
অন্যদিকে আজ ভোরে চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলার চাঁনশিকারী সীমান্ত দিয়ে আটজনকে বাংলাদেশে পাঠায় বিএসএফ। তাঁদের মধ্যে চারজন নারী ও চারজন পুরুষ রয়েছেন। বিজিবি ৫৯ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল গোলাম কিবরিয়া বলেন, আটকরা এখন বিজিবির হেফাজতে আছেন এবং তাঁদের থানায় হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। বিস্তারিত তথ্য সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হবে বলে জানান তিনি।
এভাবে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর একতরফা পুশইন প্রক্রিয়া দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের প্রেক্ষাপটে উদ্বেগজনক এবং মানবাধিকারের দৃষ্টিকোণ থেকেও প্রশ্নবিদ্ধ।
