দীর্ঘ দিন পর বাংলাদেশ শেয়ারবাজারে বিদেশি ও প্রবাসী বিনিয়োগকারীদের শেয়ারবাজার ত্যাগের প্রবণতা থেমেছে। চলতি জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে তাদের বিও (বেনিফিশিয়ারি ওনার্স) হিসাব বেড়েছে ৫০টি, যা বাজার সংশ্লিষ্টদের কাছে ইতিবাচক সংকেত হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
এর আগে ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে চলতি বছরের ২০ মে পর্যন্ত বিদেশি ও প্রবাসী বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাব ধারাবাহিকভাবে হ্রাস পেয়েছিল। এই সময়ের মধ্যে ৯ হাজার ১৭৬টি বিও হিসাব বন্ধ হয়ে যায়, যার মধ্যে শুধু ২০২৪ সালেই ৩৫৫টি হিসাব কমে যায়।
সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিডিবিএল) সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে মোট বিও হিসাবের সংখ্যা ১৬ লাখ ৮৯ হাজার ৬৮৩টি। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের সময়, অর্থাৎ গত ৫ আগস্ট এই সংখ্যা ছিল ১৬ লাখ ৬৮ হাজার ৫৮টি। সেই হিসাবে এই সময়ের মধ্যে ২১ হাজার ৬২৫টি বিও হিসাব বেড়েছে।
যদিও সরকার পতনের পর প্রথম চার কার্যদিবসে শেয়ারবাজারে বড় উত্থান দেখা গেলেও, অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পর বাজারে নিম্নমুখী প্রবণতা দেখা দেয়। তারপরও বিও হিসাব বৃদ্ধিই প্রমাণ করে—বিনিয়োগকারীরা এখনো সম্ভাবনা দেখছেন।
২০ মে পর্যন্ত বিদেশি বিও হিসাব ধারাবাহিকভাবে কমলেও, জুনের শুরুতে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৬ হাজার ৩৮৬টিতে। যদিও এই সংখ্যা এখনো শেখ হাসিনা সরকারের পতনের দিনের (৪৭ হাজার ৮৪টি) তুলনায় ৬৯৮টি কম।
উল্লেখ্য, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের শেয়ারবাজার ছাড়ার ধারা শুরু হয় ২০২৩ সালের ২৯ অক্টোবর থেকে, যেদিন তাদের বিও হিসাব ছিল ৫৫ হাজার ৫১২টি। সেখান থেকে এখন পর্যন্ত কমেছে ৯ হাজার ১২৬টি হিসাব।
অন্যদিকে, দেশি বিনিয়োগকারীদের ক্ষেত্রে চিত্রটি উল্টো। বর্তমানে স্থানীয় বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাবের সংখ্যা ১৬ লাখ ২৫ হাজার ৫১১টি। চলতি বছরে বেড়েছে ৭ হাজার ২৪৯টি। শুধু সরকার পতনের পরই বেড়েছে ২১ হাজার ৬৮৯টি বিও হিসাব।
তবে সামগ্রিকভাবে ২০২৪ সালের শুরু থেকে বিও হিসাবের সংখ্যা কমেছে ৮৩ হাজার ৮৬৮টি, যেটি বছরের শুরুতে ছিল ১৭ লাখ ৭৩ হাজার ৫৫১টি। তবে বিদেশিদের ফেরার ইঙ্গিত ও দেশি বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ বাড়ার ধারাটি ভবিষ্যতের বাজারে নতুন সম্ভাবনার বার্তা দিচ্ছে।
