ঢাকা   মঙ্গলবার ১৮ নভেম্বর ২০২৫, ৩ অগ্রাহায়ণ ১৪৩২

ঐতিহ্য ও ইতিহাসে ভরপুর কুষ্টিয়ার ৫ দর্শনীয় স্থান

ভ্রমণ

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২০:২৮, ৩১ মে ২০২৫

ঐতিহ্য ও ইতিহাসে ভরপুর কুষ্টিয়ার ৫ দর্শনীয় স্থান

ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যে ভরপুর কুষ্টিয়া জেলাটি ভ্রমণপ্রেমীদের কাছে এক অনন্য গন্তব্য। একসময়ের ভাগ-পূর্ব নদীয়া, আজকের কুষ্টিয়া শুধু প্রথাগত জেলা নয়, বরং কবি, সাহিত্যিক, সাধক ও সাংবাদিকদের স্মৃতিবিজড়িত এক কালের সাক্ষী। কুষ্টিয়ায় ঘুরতে গেলে যেসব জায়গা অবশ্যই দেখা উচিত, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে জগতি রেলস্টেশন, রবীন্দ্রনাথের শিলাইদহ কুঠিবাড়ি, মীর মশাররফ হোসেনের লাহিনীপাড়া, ফকির লালন শাহর ছেঁউড়িয়া এবং কাঙাল হরিনাথের ঐতিহাসিক এম এন প্রেস।

জগতি রেলস্টেশন বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন রেলস্টেশন, যার শুরু ১৮৬১ সালে। শিলাইদহের জমিদার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই স্টেশন ব্যবহার করতেন। আজ তা প্রায় বিলুপ্তপ্রায় হলেও এখনও যেন শতবর্ষ আগের পদধ্বনি শোনা যায় নীরব ভবনের চারপাশে।

শিলাইদহ কুঠিবাড়ি—নোবেল বিজয়ী কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জমিদার বাড়ি—যেখান থেকে বহু কালজয়ী সাহিত্য রচনা করেছেন তিনি। পাশেই রয়েছে দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রতিষ্ঠিত দাতব্য চিকিৎসালয়, আজ তা ইতিহাসের উপেক্ষিত নিদর্শন।

লাহিনীপাড়া গ্রাম, যেখানে মীর মশাররফ হোসেনের বাস্তুভিটায় গড়ে উঠেছে একটি পাঠাগার ও মিলনায়তন। এখানেই লেখা হয়েছিল বিখ্যাত ‘বিষাদ–সিন্ধু’। কংক্রিটে উৎকীর্ণ তার বিখ্যাত উক্তি—‘হায় রে অর্থ, হায় রে পাতকী অর্থ!’—আজও পাঠকদের ভাবায়।

ছেঁউড়িয়া হল বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহর সমাধিস্থল। তাঁর আধ্যাত্মিক গানের টানে বছরের বিশেষ দিনে লাখো ভক্ত ও পর্যটক ভিড় করেন এই দরগাহ প্রাঙ্গণে। সবুজে ঘেরা সমাধিক্ষেত্র যেন এক আধ্যাত্মিক প্রশান্তির উৎস।

এম এন প্রেস, বর্তমানে কাঙাল হরিনাথ জাদুঘর, কুষ্টিয়ার গ্রামীণ সাংবাদিকতার ইতিহাস বহন করে চলেছে। এখান থেকেই ছাপা হয়েছে ‘গ্রামবার্ত্তা প্রকাশিকা’, ‘হিতকরী’ ও ‘বিষাদ–সিন্ধু’। কাঙাল হরিনাথ কেবল সাংবাদিক নন, ছিলেন সাহিত্যিক, সংগঠক ও বাউলগানের পথিকৃৎ।

সব মিলিয়ে, কুষ্টিয়া কেবল একটি জেলা নয়—এটি এক জীবনঘনিষ্ঠ ইতিহাস, সাহিত্য ও লোকসংস্কৃতির অনন্য সংরক্ষণাগার। সময় ও সুযোগ হলে কুষ্টিয়ার এই দর্শনীয় স্থানগুলো একবার হলেও ঘুরে দেখা উচিত।