
বাংলাদেশের উত্তর-পূর্ব সীমানায় অবস্থিত এক অপার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের নাম জাফলং। সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার ভারতের সীমান্ত ঘেঁষা এই অঞ্চলটি পাহাড়, নদী, ঝরনা আর খাসিয়া সংস্কৃতির অপূর্ব মিশেলে রূপ নিয়েছে প্রকৃতি কন্যা নামে পরিচিত এক নৈসর্গিক লীলাভূমিতে।
পাহাড় থেকে নেমে আসা ডাওকি নদী এখান দিয়ে পিয়াইন নদীতে মিশেছে, যার স্বচ্ছ পানির নিচ দিয়ে দেখা যায় পাথরের স্তর। মেঘে ঢাকা সবুজ পাহাড়ের চূড়া, ঐতিহাসিক ঝুলন্ত সেতু, ঝরনার ছলা ছলা ধারা আর সীমান্তবর্তী খাসিয়া পল্লীর জীবনযাপন—সব মিলিয়ে জাফলং যেন প্রকৃতির এক জীবন্ত শিল্পকর্ম। বর্ষায় এর সৌন্দর্য আরও তীব্রতর হয়। এমনকি এখানে সোনাটিলা নামক গ্রামে নাকি প্রতিদিন বৃষ্টি হয়—এই কল্পকাহিনির বাস্তবতা দেখতে প্রতিদিন ছুটে আসেন অনেক ভ্রমণপ্রেমী।
জাফলং থেকে সহজেই নৌকায় করে পৌঁছানো যায় সংগ্রামপুঞ্জি বা মায়াবী ঝর্ণায়, আর পিয়াইন নদী পেরোলেই খাসিয়াদের ঐতিহ্যবাহী বসতি। তাদের পাহাড়ের ঢালে গড়া বাঁশ-চাটাইয়ের বাড়ি, পানের বরজ আর ছোট্ট গ্রামগুলো ভ্রমণপিপাসুদের বিস্ময় জাগায়।
জাফলংয়ে পৌঁছাতে প্রথমে যেতে হবে সিলেট শহরে। ঢাকা থেকে বাস, ট্রেন বা বিমানে পৌঁছানো সম্ভব। এরপর সিলেটের কদমতলী বা সোবহানীঘাট থেকে সরাসরি জাফলংগামী বাস, সিএনজি, লেগুনা কিংবা মাইক্রোবাস পাওয়া যায়। ভাড়া এবং সময় নির্ভর করে আপনার যানবাহনের ধরণ ও সুবিধার ওপর।
নিরিবিলি পরিবেশ, প্রাকৃতিক শোভা আর আদিবাসী সংস্কৃতির টানে জাফলং আজ সারাবছরই পর্যটকদের প্রিয় গন্তব্য হয়ে উঠেছে। আপনি যদি প্রকৃতির সান্নিধ্য চান, তাহলে এবারের গন্তব্য হতে পারে ‘প্রকৃতি কন্যা’ জাফলং।