ঢাকা   সোমবার ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ২৭ আশ্বিন ১৪৩২

বাংলাদেশ ব্যাংকে বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা নিয়ে বিএসইসির চিঠি

শেয়ারবাজার

শেয়ারবিজনেস ডেস্ক

প্রকাশিত: ২১:২১, ১২ অক্টোবর ২০২৫

বাংলাদেশ ব্যাংকে বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা নিয়ে বিএসইসির চিঠি

 শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ৫টি ইসলামী বাণিজ্যিক ব্যাংকের একীভূতকরণের সিদ্ধান্তের মাঝে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সংরক্ষণের জোর দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এই বিষয়ে সম্প্রতি নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের কাছে একটি জরুরি চিঠি পাঠিয়েছে।

বিএসইসি তার চিঠিতে উল্লেখ করেছে, একীভূতকরণের সিদ্ধান্তে আমানতকারীদের সম্পূর্ণ সুরক্ষার কথা বলা হলেও, তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলোর সাধারণ শেয়ারহোল্ডার বা ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার কোনো সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা নেই। তাই বিনিয়োগকারীদের বিপুল আর্থিক ক্ষতি রোধ করতে কমিশন দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।


বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র অনুযায়ী, 'ব্যাংক রেজোলিউশন অধ্যাদেশ, ২০২৫' অনুসারে, একীভূত ব্যাংকে পুরনো শেয়ারহোল্ডাররা কোনো ক্ষতিপূরণ পাবেন না। নতুন ব্যাংকটি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হলেও, সেখানে বিদ্যমান পাঁচ ব্যাংকের বিনিয়োগকারীদের কোনো শেয়ার থাকবে না। নতুনভাবে ইস্যু করা শেয়ার দিয়েই কেবল নতুন ব্যাংকের মূলধন গঠন করা হবে।

বাজারসংশ্লিষ্টদের প্রশ্ন, এই ৫টি ইসলামী ব্যাংকের বর্তমান সংকটের জন্য দায়ী উদ্যোক্তা ও পরিচালকরা, যাদের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও তারল্য সংকটের অভিযোগ রয়েছে। তাহলে কেন সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কোনো দায় না থাকা সত্ত্বেও তাদের বিনিয়োগ শূন্যে পরিণত হবে? তাদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে দায় নির্ধারণের দাবিও তোলা হয়েছে।

বিএসইসি’র চিঠিতে ৪টি সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব

এই প্রেক্ষাপটে, বিএসইসি তাদের চিঠিতে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক পিএলসি, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসি, ইউনিয়ন ব্যাংক পিএলসি, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসি এবং এক্সিম ব্যাংক পিএলসির একীভূতকরণে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য ৪টি সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব দিয়েছে:

১. সম্পদের পুনর্মূল্যায়ন: ব্যাংকগুলোর লাইসেন্স, ব্র্যান্ড ভ্যালু, শাখা নেটওয়ার্ক, ক্লায়েন্ট বেজ এবং মানবসম্পদসহ সামগ্রিক সম্পদমূল্য পুনর্মূল্যায়ন করে বিনিয়োগকারীর অংশ নির্ধারণ করা।


২. দায়ী ব্যক্তিদের সম্পত্তি: ব্যাংকের ঋণ জামানত, দায়ী ব্যক্তিপণ ও তাদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি বিবেচনায় এনে বিনিয়োগকারীর স্বার্থমূল্য নির্ধারণ করা।

৩. ন্যূনতম ক্ষতিপূরণ: 'ব্যাংক রেজোলিউশন অধ্যাদেশ-২০২৫' এর ধারা ৭৭ অনুযায়ী দায়ী ব্যক্তি ছাড়া অন্য সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের জন্য একটি ন্যূনতম ক্ষতিপূরণমূল্য নির্ধারণ করা।

৪. তালিকাচ্যুতি নয়: বিনিয়োগকারীর স্বার্থমূল্য অনুপাত নির্ধারণ ও ঘোষণা না করে কোনো ব্যাংককে শেয়ারবাজার থেকে তালিকাচ্যুত না করার অনুরোধ জানানো।

কমিশন মনে করে, একীভূত ব্যাংকের তালিকাভুক্তি প্রক্রিয়ায় সাধারণ বিনিয়োগকারীদের সম্পূর্ণ বঞ্চিত করা হলে শেয়ারবাজারে আস্থা আরও ভেঙে পড়বে। তাই সরকার যেমন আমানতকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে, তেমনি শেয়ারহোল্ডারদের সুরক্ষাও সমান গুরুত্ব দেওয়া জরুরি বলে কমিশন মনে করে।