
শরিয়াহভিত্তিক সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড (এসআইবিএল)-এর পরিচালনা বোর্ড থেকে পদত্যাগ করেছেন প্রতিষ্ঠানটির একমাত্র শেয়ারধারী পরিচালক ও সাবেক চেয়ারম্যান মো. রেজাউল হক। রোববার (১২ অক্টোবর) তিনি ব্যাংকের বর্তমান চেয়ারম্যান বরাবর পদত্যাগপত্র জমা দেন।
রেজাউল হকের পদত্যাগ এমন এক সময়ে এলো, যখন সরকার শরিয়াহভিত্তিক পাঁচটি ব্যাংক একীভূত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গত বৃহস্পতিবার অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের এক সভায় এ প্রস্তাব অনুমোদিত হয়।
২০১৭ সালে এস আলম গ্রুপ সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নেন। তবে ২০২৪ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাংকটির পরিচালনা বোর্ড বাতিল করে নতুন বোর্ড গঠন করে।
এই বোর্ডে রেজাউল হক ছাড়াও চারজন স্বতন্ত্র পরিচালক যুক্ত হন। নতুন চেয়ারম্যান হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. এম সাদিকুল ইসলাম। তবে এক বছরের বেশি সময়েও ব্যাংকের আর্থিক অবস্থা উন্নত হয়নি, বরং অব্যবস্থাপনা আরও প্রকট হয়েছে।
পদত্যাগপত্রে রেজাউল হক বলেন, “স্বতন্ত্র পরিচালকদের ব্যাংকের সঙ্গে কোনো আর্থিক স্বার্থ নেই। কিন্তু তাদের সমন্বয়ে গঠিত বোর্ড ব্যাংক পরিচালনায় কার্যকর কোনো ভূমিকা রাখতে পারেনি। প্রকৃত উদ্যোক্তা ও শেয়ারধারীদের হাতে দায়িত্ব দিলে পরিস্থিতির উন্নয়ন সম্ভব হতো।”
তিনি আরও বলেন, “স্বতন্ত্র পরিচালকরা গত এক বছর ধরে শুধুই বেতন নিয়েছেন। তারা কোনো কার্যকর সিদ্ধান্ত নেননি। এমনকি আমার অনুপস্থিতিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের একীভূতকরণ সংক্রান্ত শুনানিতে অংশগ্রহণ করেছেন, যা তাদের এখতিয়ারের বাইরে।”
রেজাউল হক দাবি করেন, তিনি ২০১৩ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত ব্যাংকের চেয়ারম্যান ছিলেন। ২০১৬ সালে ব্যাংক ২০ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দেয়। তবে ২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর, ‘অস্ত্রের মুখে’ তাকে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়— এমন অভিযোগও তোলেন তিনি।
তিনি বলেন, “এস আলম গ্রুপ ব্যাংকটি দখল নেওয়ার পর গত সাত বছরে দুর্নীতি ও লুটপাটের মাধ্যমে ব্যাংকটি ধ্বংসের পথে ঠেলে দিয়েছে। ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর আশা করেছিলাম ব্যাংকটি ফের আমাদের হাতে ফিরবে। কিন্তু তার পরিবর্তে অকার্যকর একটি স্বতন্ত্র বোর্ড গঠন করা হয়েছে।”
পদত্যাগের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে রেজাউল হক বলেন, “স্বতন্ত্র পরিচালকরা ব্যর্থ হয়েছেন, তাই আমি পদত্যাগ করেছি। এখন কোরাম পূর্ণ না থাকায় বোর্ডের সভাও করা সম্ভব হবে না।”