
শেয়ারবাজারের অন্যতম সম্পদ ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান এলআর গ্লোবাল বাংলাদেশ অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড গুরুতর অনিয়ম ও আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে নিয়ন্ত্রক সংস্থার কঠোর নজরদারিতে এসেছে। অভিযোগ রয়েছে, প্রতিষ্ঠানটি ছয়টি মিউচুয়াল ফান্ডের বিপুল অর্থ অবৈধভাবে বিনিয়োগ করে আত্মসাৎ করেছে এবং বিদেশে পাচার করেছে। এতে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এ ঘটনায় বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) একটি তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। ষাট কার্যদিবসের মধ্যে কমিটিকে বিস্তারিত প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তদন্তে এলআর গ্লোবালের অধীনে পরিচালিত ছয়টি মিউচুয়াল ফান্ডের আর্থিক লেনদেন খতিয়ে দেখা হবে।
তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেন—বিএসইসির অতিরিক্ত পরিচালক শেখ মো. লুৎফুল কবির, উপ-পরিচালক এস. এম. আহসানুল কবির এবং সহকারী পরিচালক মো. মতিউর রহমান।
তদন্ত শুরু হওয়ার আগেই বিএসইসি অবৈধভাবে বিনিয়োগ করা ৪৯ কোটি টাকা সুদসহ ফেরত আনার নির্দেশ দিয়েছে এলআর গ্লোবালকে। নির্দেশ অমান্য করলে সর্বোচ্চ ৬০ কোটি টাকা জরিমানা আরোপ করা হবে।
এরই মধ্যে ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান বিনিয়োগ কর্মকর্তা রিয়াজ ইসলামের ওপর ৫০ কোটি টাকা জরিমানা ধার্য করা হয়েছে। এছাড়া পরিচালক জর্জ স্টককে ৪ কোটি টাকা, সাবেক লিগ্যাল অ্যান্ড কমপ্লায়েন্স প্রধান মনোয়ার হোসেনকে ৪ কোটি টাকা, প্রধান অর্থ কর্মকর্তা রোনাল্ড মিকি গোমেজকে ১ কোটি টাকা এবং সংশ্লিষ্ট ছয়টি মিউচুয়াল ফান্ডের ওপর মোট ১ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
এলআর গ্লোবালের অনিয়ম নতুন কিছু নয়। ২০১৫ সালেও তহবিল পরিচালনায় অনিয়মের দায়ে প্রতিষ্ঠানটিকে ৫০ লাখ টাকা জরিমানা করেছিল বিএসইসি।
বাজার বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বর্তমান কমিশনের এই কঠোর পদক্ষেপ বিনিয়োগকারীদের আস্থা পুনরুদ্ধারে সহায়ক হবে এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের অনিয়ম প্রতিরোধে একটি বড় দৃষ্টান্ত হিসেবে কাজ করবে।