
শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) আটটি ব্রোকারেজ হাউজের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। এই আটটি প্রতিষ্ঠানের নিট সম্পদমূল্যে (এনএভি) ঘাটতি ধরা পড়েছে, যা সিকিউরিটিজ আইন অনুযায়ী নির্ধারিত মানদণ্ডের পরিপন্থী। এই তালিকার মধ্যে আছে ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের মালিকানাধীন মোনার্ক হোল্ডিংস লিমিটেড।
সম্প্রতি পরিচালিত এক তদন্তে বিএসইসি এই ঘাটতিগুলো উদঘাটন করে। তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে বিএসইসি দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)-কে একটি আনুষ্ঠানিক চিঠি পাঠিয়ে এসব ব্রোকারেজ হাউজের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেছে।
তদন্তে ধরা পড়া আটটি প্রতিষ্ঠান হলো- মোনার্ক হোল্ডিংস লিমিটেড, মীর সিকিউরিটিজ লিমিটেড, কলম্বিয়া শেয়ারস অ্যান্ড সিকিউরিটিজ লিমিটেড, উইংসফিন লিমিটেড, ফারিহা সিকিউরিটিজ লিমিটেড, অ্যাসুরেন্ট সিকিউরিটিজ অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড, ম্যাট্রিক্স সিকিউরিটিজ লিমিটেড এবং তাসিয়া সিকিউরিটিজ লিমিটেড।
উল্লেখ্য, মোনার্ক হোল্ডিংস লিমিটেডের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে আছেন বিশ্বখ্যাত ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে কাজ করছেন সমবায় অধিদপ্তরের উপ-নিবন্ধক আবুল খায়ের হিরুর স্ত্রী কাজী সাদিয়া হাসান। অন্যদিকে, মীর সিকিউরিটিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান হিসেবে রয়েছেন ব্যবসায়ী নেতা মীর আখতার হোসেন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মীর নাসির হোসেন।
বিএসইসির চিঠিতে বলা হয়েছে, ডিএসই'র অনুরোধের প্রেক্ষিতে এই আটটি ট্রেকহোল্ডারের আর্থিক অবস্থার ওপর তদন্ত চালানো হয়। এতে দেখা যায়, তারা "ট্রেডিং রাইট এনটাইটেলমেন্ট সার্টিফিকেট (ট্রেক)" বিধিমালা, ২০২০-এর বিধি ৭(৪) অনুযায়ী নির্ধারিত নিট সম্পদের মানদণ্ড বজায় রাখতে ব্যর্থ হয়েছে।
আইন অনুযায়ী, প্রতিটি ব্রোকারেজ হাউজের নিট সম্পদ তাদের পরিশোধিত মূলধনের ৭৫ শতাংশের বেশি থাকা বাধ্যতামূলক। এই শর্ত পূরণে ব্যর্থ হলে প্রতিষ্ঠানকে আর্থিকভাবে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে গণ্য করা হয় এবং তাতে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে।
বিএসইসি মনে করে, এই নিয়ম কঠোরভাবে অনুসরণ করলে ব্রোকারেজ হাউজগুলো আর্থিকভাবে শক্তিশালী হয়, বিনিয়োগকারীর অর্থ সুরক্ষিত থাকে এবং বাজারে স্বচ্ছতা বজায় থাকে। বিধিমালা অনুযায়ী, শর্ত পূরণে ব্যর্থ হলে ট্রেক সার্টিফিকেট বাতিল পর্যন্ত করার বিধান রয়েছে।