
বিএনপি সরকারের সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী শেয়ারবাজারে সরকারের হস্তক্ষেপ কমানো এবং 'তেল মারার' সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি দৃঢ়ভাবে বলেছেন, এই সংস্কৃতি ও রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে পরিবর্তন না আসলে কোনো সংস্কারই ফলপ্রসূ হবে না।
সোমবার (১৪ জুলাই) পল্টনস্থ ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) অডিটোরিয়ামে 'ক্যাপিটাল মার্কেট পুনর্গঠন ও বাস্তবতা' শীর্ষক কর্মশালায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। ইআরএফ ও ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিবিএ) যৌথভাবে কর্মশালাটির আয়োজন করে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য তার বক্তব্যে শেয়ারবাজারে সরকারের অতিরিক্ত হস্তক্ষেপকে ক্ষতিকারক হিসেবে চিহ্নিত করেন। তিনি বলেন, "শেয়ারবাজারে সরকারের হস্তক্ষেপ ক্ষতিকারক। এই কতৃত্ব কমাতে হবে। পাশাপাশি ‘তেল মারার’ সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে আসতে হবে। এ সংস্কৃতির ও রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে পরিবর্তন না আসলে যতই সংস্কার করা হোক কেন, লাভ হবে না।"
তিনি আরও যোগ করেন, 'তেল দেয়াটা কালচারের বিষয়। যদি রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন না হয়, তাহলে বাংলাদেশে হাজারো সংস্কার করেও লাভ হবে না। রাজনৈতিক নিয়োগ থেকে শুরু করে ‘তেল মারার’ সংস্কৃতি থেকে বের হতে না পারলে কোনো লাভ হবে না।’ তিনি ব্যক্তিগতভাবে 'তেলে' তার কাছে কোনো কাজ হয় না বলেও জানান।
বিএনপির এই সিনিয়র নেতা জোর দিয়ে বলেন, বিএনপি সরকারের সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যানসহ অন্যান্য নিয়ন্ত্রক সংস্থায় রাজনৈতিকভাবে নিয়োগ দেওয়া হয়নি। তিনি দাবি করেন, "তাই ওই সময় ব্যাংক ও শেয়ারবাজারে তেমন সমস্যা দেখা দেয়নি। আগামীতে বিএনপি ক্ষমতায় আসলে এ ধারা অব্যাহত থাকবে।"
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় আসলে দেশের শেয়ারবাজার শক্তিশালী করার উদ্যোগ নেওয়া হবে। তিনি মনে করেন, বিগত বছরগুলোতে এই খাতটি এত বেশি সমস্যায় পড়েছে যে, শুধু সরকারি কিছু প্রতিষ্ঠান শেয়ারবাজারে আনার মতো ছোট উদ্যোগে তেমন কাজ হবে না। তার মতে, "সামগ্রিকভাবে শেয়ারবাজারের উন্নয়নে কাজ করতে হবে।"
কর্মশালায় উপস্থিত কয়েকজন বক্তা নির্বাচনের এখনও অনেক দেরি থাকা সত্ত্বেও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে ভবিষ্যৎ অর্থমন্ত্রী হিসেবে আখ্যায়িত করেন। তিনি এ বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাননি।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) চেয়ারম্যান একেএম হাবিবুর রহমান এবং ডিবিএ-এর প্রেসিডেন্ট সাইফুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইআরএফ প্রেসিডেন্ট দৌলত আকতার মালা।