
চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার কোদালা ইউনিয়নের সন্দীপপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এক ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ উঠেছে বিদ্যালয়ের এক সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে। বিষয়টি জানাজানি হলে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
বিদ্যালয় ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ১ জুলাই ক্লাস চলাকালীন সময়ে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক বদিউল আলম এক শিক্ষার্থীর শরীরে আপত্তিকরভাবে স্পর্শ করেন। প্রথমে ভয়ে বিষয়টি গোপন রাখলেও, শিশুটি পরে বাড়িতে গিয়ে মাকে সব জানায়। পরদিন ২ জুলাই শিশুটির মা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বেলাল উদ্দিনের কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দেন।
প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘অভিযোগ পাওয়ার পরপরই স্থানীয় অভিভাবক, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে একটি জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে অভিযুক্ত শিক্ষক বদিউল আলম নিজেই দোষ স্বীকার করেন বলে দাবি করেন তিনি। এরপর থেকে তাকে ক্লাসে পাঠদান থেকে বিরত রাখা হয়েছে।’
এলাকাবাসীর অভিযোগ, বদিউল আলমের বিরুদ্ধে পূর্বেও এমন অভিযোগ ছিল, তবে প্রতিবারই তিনি স্থানীয় প্রভাবশালী মহলের সহায়তায় পার পেয়ে যান। এবারও তাদের অভিযোগ, ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য ভুক্তভোগী পরিবারটির ওপর নানা চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে।
এক অভিভাবক বলেন, ‘এটা প্রথম নয়। আগেও এমন ঘটনা ঘটিয়েছেন ওই শিক্ষক, কিন্তু কেউ সঠিক তদন্ত না করায় তিনি বারবার করার সাহস পাচ্ছেন।’
বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ লিখিত অভিযোগ দিলেও এখনো পর্যন্ত উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
রাঙ্গুনিয়া উপজেলার সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুল মোহাইমেন বলেন, ‘ঘটনাটি মৌখিকভাবে শুনেছি। তবে অভিযুক্ত শিক্ষক বদিউল আলম ছুটিতে রয়েছেন। তাছাড়া উপজেলা শিক্ষা অফিসারও ঢাকায় থাকায় বিষয়টি আলোচনার অপেক্ষায় আছে।’
এমন মন্তব্যে ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা বলছেন, ‘বারবার এমন ঘটনা ঘটলেও শিক্ষা বিভাগের নির্লিপ্ততা ও গড়িমসির কারণেই অপরাধীরা রেহাই পায়।’
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর মা বলেন, ‘আমার মেয়ের সঙ্গে ক্লাসে যৌন নিপীড়ন করেছে শিক্ষক বদিউল আলম। আগেও তিনি একাধিকবার এমন কাণ্ড করেছেন। আমরা তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই, যাতে আর কোনো শিশুর সঙ্গে এমন না হয়।’
ঘটনার বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক বদিউল আলমের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি প্রথমে কল কেটে দেন, পরে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।