ঢাকা   শুক্রবার ০৯ মে ২০২৫, ২৫ বৈশাখ ১৪৩২

সৌভাগ্যবান হওয়ার আসল সূত্র যা রাসুল (সা.) আমাদের শিখিয়েছেন

ধর্ম

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ১৮:৫৯, ৭ মে ২০২৫

সৌভাগ্যবান হওয়ার আসল সূত্র যা রাসুল (সা.) আমাদের শিখিয়েছেন

পৃথিবীর প্রতিটি মানুষ চায় সফলতা—কিন্তু এই সফলতার সংজ্ঞা সবার কাছে এক নয়। কারো কাছে তা দুনিয়ার সম্পদ, ক্ষমতা বা আরাম-আয়েশে পূর্ণ জীবন, আবার কারো কাছে তা হয় সুস্বাস্থ্য বা পারিবারিক সুখ। কিন্তু ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে প্রকৃত সফলতা হলো—জাহান্নাম থেকে মুক্তি পেয়ে জান্নাতে প্রবেশ করা এবং দুনিয়াতে সেই জান্নাতের উপযুক্ত জীবন গঠন করে নেওয়া।

রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাদের এমন কিছু শিক্ষার কথা বলেছেন, যা অনুসরণ করলে একজন মানুষ পরকালের পাশাপাশি দুনিয়াতেও সৌভাগ্যবান হতে পারেন।

প্রকৃত ধনী হওয়ার পথ:
ধন-সম্পদের আধিক্য কাউকে প্রকৃত ধনী করে না। মানুষের চাহিদা যতই পূর্ণ হোক, ততই তা বাড়তে থাকে। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘ধন-সম্পদের আধিক্য ধনী হওয়া নয়, বরং মনের ধনীই প্রকৃত ধনী।’ (বুখারি, মুসলিম)। যিনি অন্তরে তুষ্ট, তিনিই ধনী। অন্তরের এই তৃপ্তি আসে আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল, তাকদিরে বিশ্বাস ও কৃতজ্ঞতার মাধ্যমে।

সুখী হওয়ার সঠিক পন্থা:
ধনী হলেই মানুষ সুখী হয়—এটা একধরনের বিভ্রান্তি। বাস্তবতা হলো, বেশি সম্পদ প্রায়শই ব্যস্ততা, দুশ্চিন্তা এবং জীবনের জটিলতা বাড়িয়ে দেয়। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ইসলাম গ্রহণ করেছে, প্রয়োজনমতো রিজিক পেয়েছে এবং তাতে সন্তুষ্ট থেকেছে, সেই ব্যক্তি সফল।’ (ইবনে মাজাহ) অর্থাৎ ইসলামের আলোকে জীবন পরিচালনা করে সামর্থ্য অনুযায়ী জীবনে তুষ্ট থাকলেই প্রকৃত সুখ মিলে।

সৌভাগ্যের চিহ্ন কী?
রাসুল (সা.) চারটি বিষয়ের কথা বলেছেন যা মানুষকে এই দুনিয়ায় সৌভাগ্যবান করে তোলে:
১. পরহেজগার স্ত্রী,
২. প্রশস্ত ও নিরাপদ বাসস্থান,
৩. সৎ ও সহানুভূতিশীল প্রতিবেশী,
৪. আরামদায়ক বাহন।
(মুসনাদ আহমাদ; ইবনে হিব্বান)

রাসুল (সা.) নিজে এই চারটির মধ্যে কেবল প্রথমটি পেয়েছেন। বাকিগুলোতে তিনি সীমাবদ্ধতা ও কষ্ট সয়েছেন, কিন্তু কখনো অসন্তুষ্ট হননি। এ থেকেই আমরা শিক্ষা পাই—আল্লাহর দেওয়া যা আছে তাতেই সন্তুষ্ট থাকাই হচ্ছে প্রকৃত সৌভাগ্য।

শেষ কথা:
আল্লাহ বলেন, ‘যাকে জাহান্নাম থেকে দূরে রাখা হলো এবং জান্নাতে প্রবেশ করানো হলো, সেই-ই প্রকৃত সফলকাম। আর দুনিয়ার জীবন ধোঁকার উপকরণ ছাড়া কিছুই নয়।’ (সুরা আলে ইমরান : ১৮৫)

সুতরাং দুনিয়ার বাহ্যিক চাকচিক্যে প্রতারিত না হয়ে, ইসলামি মূল্যবোধকে আঁকড়ে ধরেই ধনী, সুখী ও সৌভাগ্যবান হওয়ার পথ খুঁজতে হবে। সেই পথই আমাদের জান্নাতের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।