ঢাকা   সোমবার ১৬ জুন ২০২৫, ৩ আষাঢ় ১৪৩২

সচিবদের পানির দামে ফ্ল্যাট: তদন্তে কমিটি, কার্যক্রম স্থগিত

জাতীয়

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ১৮:৪৮, ১৫ জুন ২০২৫

সচিবদের পানির দামে ফ্ল্যাট: তদন্তে কমিটি, কার্যক্রম স্থগিত

সরকারি জমিতে সচিবসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নামমাত্র মূল্যে ফ্ল্যাট বরাদ্দের ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়। রোববার প্রকাশিত আদেশে বলা হয়, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব এহসানুল হক কমিটির আহ্বায়ক, আর গৃহায়ণ ও গণপূর্ত এবং জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিবরা সদস্য হিসেবে থাকছেন। প্রথম আলোয় প্রকাশিত অনুসন্ধানী প্রতিবেদনকে কেন্দ্র করে এই কমিটি গঠন করা হয়।

কমিটিকে আগামী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ফ্ল্যাট নির্মাণ ও হস্তান্তরের কার্যক্রমও স্থগিত করেছে মন্ত্রণালয়। উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান জানান, অভ্যন্তরীণ প্রতিবেদন ও চূড়ান্ত তদন্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ছাড়া সেতু বিভাগকে বরাদ্দপ্রাপ্তদের তালিকা ও নীতিগত অবস্থান জানিয়ে দিতে তিন দিনের সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে।

তদন্ত কমিটির দায়িত্বে বলা হয়েছে, কী প্রক্রিয়ায় ও কার ভিত্তিতে এসব ফ্ল্যাট বরাদ্দ হয়েছে, তাতে কোনো অনিয়ম হয়েছে কি না, তা নির্ধারণ করে দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করতে হবে। পাশাপাশি বরাদ্দপ্রাপ্তদের মধ্যে কেউ পূর্বে রাজউক বা গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে জমি বা ফ্ল্যাট পেয়েছেন কি না, তাও খতিয়ে দেখা হবে।

প্রকল্পটি মূলত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের জন্য ক্ষতিগ্রস্তদের আবাসনের জন্য কেনা জমির অংশ। এখানকার ১.১৫ একর জায়গায় সচিব ও কর্মকর্তাদের জন্য ৪টি ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে তিনটি ভবনে ১৬৮টি ফ্ল্যাট সচিব ও বড় আমলাদের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে ১৪০টি ইতোমধ্যে বরাদ্দ শেষ। সূত্রমতে, এসব ফ্ল্যাট পানির দামে পেয়ে গেছেন ৩২ জন সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তা, যাঁদের কেউ এখনো চাকরিতে, কেউ বিদেশি সংস্থায় চুক্তিভিত্তিক নিয়োজিত, আর বাকিরা অবসরে।

বিতর্কিত এই বরাদ্দে প্রভাবশালী আমলারা যেমন রয়েছেন, তেমনি রয়েছেন সাবেক মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ কর্মকর্তারাও। অনেক সচিবের আবার আলাদা করে ঢাকায় রাজউকের প্লটও রয়েছে। ফলে একই ব্যক্তি একাধিক সুবিধা ভোগ করছেন। প্রকল্পটি এখনো শেষ হয়নি, অথচ এর আগেই ফ্ল্যাট বরাদ্দ এবং হস্তান্তরের আয়োজন নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন।