
আগামী ২৮ জুন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের আইনজীবী তালিকাভুক্তির লিখিত পরীক্ষা। পরীক্ষার্থীদের প্রস্তুতিতে সহায়তার লক্ষ্যে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হচ্ছে প্রস্তুতি পরামর্শ। আজকের পর্বে থাকছে বহুল আলোচিত ও পরীক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ‘বাংলাদেশ বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা ১৯৭২’ নিয়ে প্রস্তুতির দিকনির্দেশনা। পরামর্শ দিয়েছেন ঢাকা জজকোর্টের আইনজীবী রিয়াজুর রহমান।
সহজ মনে করলেই ভুল হবে
এই অধ্যায় থেকে প্রতিবারই লিখিত প্রশ্নপত্রে দুটি প্রশ্ন আসে, যার মধ্যে একটি উত্তর দিতে হয়। নম্বর মাত্র ১০ হলেও এই অংশে ভালো করলে তা পরীক্ষায় পাস করার ক্ষেত্রে বড় পার্থক্য গড়ে দেয়। অনেকেই ‘সহজ’ ভেবে অবহেলা করেন, কিন্তু বারবার দেখা গেছে, এই অংশে ভালো পারফরম্যান্স করা প্রার্থীরা বেশ এগিয়ে থাকেন।
কীভাবে পড়বেন?
‘বাংলাদেশ বার কাউন্সিল আদেশ ও বিধিমালা ১৯৭২’ আইনজীবীদের আচরণবিধি ও পেশাগত নৈতিকতা নির্ধারণ করে। এই আইনে কীভাবে বার কাউন্সিল গঠিত হয়, এর সদস্যদের দায়িত্ব ও নির্বাচনী প্রক্রিয়া কী, কতগুলো স্থায়ী ও অস্থায়ী কমিটি রয়েছে, সেই কমিটিগুলোর কাজ কী—এসব বিস্তারিত বলা আছে। প্রশ্নপত্রে এসব মৌলিক বিষয় থেকেই প্রশ্ন আসে।
বার কাউন্সিল বনাম বার অ্যাসোসিয়েশন
অনেক পরীক্ষার্থী এখনো বার কাউন্সিল ও বার অ্যাসোসিয়েশনের মধ্যে বিভ্রান্ত হন। অথচ এই দুটি প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা ও কাঠামো একেবারে আলাদা। তাই এ বিষয়ে পরিষ্কার ধারণা থাকা জরুরি। পরীক্ষায় প্রায়শই পার্থক্য নির্ণয়ের প্রশ্ন থাকে।
বার ট্রাইব্যুনাল ও শৃঙ্খলাবিধি
আদেশের অনুচ্ছেদ ৩২ থেকে ৩৬ এবং বিধি ৪১, ৪১(ক), ৫০ বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আইনজীবীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়েরের পদ্ধতি, ট্রাইব্যুনালের ক্ষমতা ও প্রক্রিয়া, সুয়োমোটো পদক্ষেপ গ্রহণ—এসব অংশ ভালোভাবে আয়ত্তে আনতে হবে। অভিযোগ দায়েরসংক্রান্ত মুসাবিদা অনুশীলন করাও প্রয়োজনীয়, কারণ মাঝে মাঝে প্রশ্নপত্রে এই ফরমেটেই প্রশ্ন আসে।
নৈতিকতা ও দায়িত্ব
আইনজীবী হিসেবে আদালত, মক্কেল, সহকর্মী ও সমাজের প্রতি দায়িত্ব কেমন হওয়া উচিত—এ নিয়ে নীতিমালাভিত্তিক রচনামূলক প্রশ্নও আসতে পারে। বাস্তবজীবনে প্রাসঙ্গিক এই অংশে প্রস্তুতি ভালো হলে রচনার প্রশ্নগুলো সহজেই মোকাবিলা করা যায়।
অতীত প্রশ্নপত্র বিশ্লেষণ জরুরি
বিগত বছরের প্রশ্নপত্রগুলো বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, অনেক প্রশ্ন বারবার ঘুরে ফিরে আসে। তাই পুরনো প্রশ্ন সমাধান করলে প্রশ্নের ধরন, কাভারেজ ও গুরুত্বপূর্বক অধ্যায় বুঝে নেওয়া সহজ হয়।
এই আইনের গুরুত্ব যতটা কম মনে হয়, বাস্তবে তা ঠিক ততটাই গুরুত্বপূর্ণ। ১০ নম্বরের এই অধ্যায় আপনাকে কৃতকার্য হতে বড় সহায়তা করতে পারে। তাই ‘সহজ’ ভেবে ফেলে না রেখে গঠন, ট্রাইব্যুনাল, শাস্তিমূলক ব্যবস্থা, দায়িত্ববোধ ও রচনামূলক অংশে পুঙ্খানুপুঙ্খ প্রস্তুতি নিতে হবে। যত বেশি অনুশীলন করবেন, পরীক্ষার হলে তত বেশি আত্মবিশ্বাস পাবেন।