
ডেঙ্গু একটি ভাইরাসজনিত রোগ, যা এডিস মশার (বিশেষ করে এডিস এজিপ্টাই) কামড়ে হয়। এর সাধারণ লক্ষণ হলো জ্বর, মাথাব্যথা, শরীর ব্যথা, বমি বমি ভাব, বমি ও ত্বকে র্যাশ বা ফুসকুড়ি। ডেঙ্গুর হালকা পর্যায়ে ভালো যত্ন নিলে সেরে যায়। তবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে রোগটি মারাত্মক রূপ নিতে পারে, যেমন: ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভার বা ডেঙ্গু শক সিনড্রোম, যা জীবনঝুঁকিপূর্ণ এবং জরুরি চিকিৎসা দরকার হয়।
ডেঙ্গু আক্রান্ত হলে শরীর ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করে। এই সময় সঠিক খাবার খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে, শরীর দ্রুত শক্তি ফিরে পায়, আর জটিলতা এড়ানো যায়।
ডেঙ্গু জ্বরে কী খাওয়া উচিত?
১। তরল খাবার বেশি খান:
পানি: দিনে অন্তত ৮-১০ গ্লাস পানি খান।
ডাবের পানি: শরীরে ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্য বজায় রাখে।
ভেষজ চা: আদা চা পান করলে হালকা আরাম মেলে।
সবজি বা মুরগির স্যুপ (ঝোল): শরীর গরম রাখতে এবং পুষ্টি দিতে সাহায্য করে।
ওআরএস: শরীরের পানিশূন্যতা দূর করতে খুবই কার্যকর।
ঘরোয়া ইলেক্ট্রোলাইট পানীয়: লেবুর রস, চিনি ও এক চিমটি লবণ মিশিয়ে পানি তৈরি করুন।
২। ফল ও সহজে হজমযোগ্য খাবার:
কলা, পেঁপে, তরমুজ: সহজে হজম হয়, ভিটামিন ও পানির ঘাটতি পূরণ করে।
ডালিম: ক্লান্তি দূর করে, প্লাটিলেট বাড়াতে সহায়তা করে।
পেঁপে পাতা : অনেক সময় প্লাটিলেট বাড়ানোর জন্য পাতা থেকে রস তৈরি করে খাওয়ানো হয় (চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া না খাওয়াই ভালো)।
৩। রান্না করা সবজি:
গাজর, কুমড়া, পালং শাক: হালকা সিদ্ধ করে খেতে হবে।
৪। প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার:
সিদ্ধ ডিম, সিদ্ধ মুরগি, টোফু: শক্তি জোগায় এবং সহজে হজম হয়।
ডেঙ্গু জ্বরে কী এড়িয়ে চলা উচিত?
১। মসলাদার ও তেলেভাজা খাবার
২। ক্যাফেইনযুক্ত বা অতিরিক্ত মিষ্টি পানীয় (কফি, কোলা)
৩। কাঁচা বা কম রান্না করা খাবার
৪। অ্যালকোহল
এসব খাবার হজমে সমস্যা, পানিশূন্যতা বা শরীরের উপর অতিরিক্ত চাপ ফেলতে পারে।
খাদ্যতালিকা পরিচালনায় কিছু টিপস: বারবার অল্প করে খাবেন, একসঙ্গে বেশি খাবেন না। শরীর ক্লান্ত থাকলে বিশ্রাম নিন, জোর করে খেতে যাবেন না। রোগের লক্ষণ বাড়লে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। কোনো ঘরোয়া টোটকা বা খাবার নিয়মিত খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।