ঢাকা   সোমবার ১১ আগস্ট ২০২৫, ২৭ শ্রাবণ ১৪৩২

বাংলাদেশ ব্যাংক হবে আমলাবিহীন, গভর্নর মন্ত্রীর মর্যাদায়

অর্থ ও বাণিজ্য

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ১৯:৫৯, ১১ আগস্ট ২০২৫

বাংলাদেশ ব্যাংক হবে আমলাবিহীন, গভর্নর মন্ত্রীর মর্যাদায়

 বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে মন্ত্রীর মর্যাদা দেওয়া এবং প্রধান বিচারপতির কাছে শপথ নেওয়ার প্রস্তাব রয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক অধ্যাদেশ (সংশোধন) ২০২৫-এর খসড়ায়।

বাংলাদেশ ব্যাংক আদেশ ১৯৭২-এর পরিবর্তে প্রস্তাবিত এই আইনটির লক্ষ্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বায়ত্তশাসন ও জবাবদিহিতা জোরদার করা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গভর্নর আহসান এইচ মনসুর।


খসড়ায় বাংলাদেশ ব্যাংকের বোর্ড থেকে সব আমলাকে বাদ দেওয়ার প্রস্তাব রয়েছে—যা বর্তমান কাঠামোতে একটি বড় পরিবর্তন। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সুপারিশ অনুযায়ী কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বাধীনতা বাড়াতে এ খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে।

রোববার (১০ আগস্ট) সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি) আয়োজিত এক আলোচনায় গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেন, “সরকার ও আমলাতন্ত্রের পক্ষ থেকে বাধা আসতে পারে, কিন্তু আর্থিক খাতের শাসনব্যবস্থা অবশ্যই রাজনীতির ঊর্ধ্বে থাকতে হবে।”

বর্তমানে গভর্নরকে সরকার নিয়োগ দেন এবং তার পদমর্যাদা মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবের নিচে থাকে। নতুন খসড়া অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রীর সুপারিশ ও সংসদের অনুমোদনের ভিত্তিতে রাষ্ট্রপতি গভর্নর নিয়োগ দেবেন। প্রার্থীর জন্য ‘ফিট অ্যান্ড প্রপার’ মানদণ্ড প্রযোজ্য হবে।

দায়িত্ব গ্রহণের আগে গভর্নর ও উপ-গভর্নররা প্রধান বিচারপতির কাছে শপথ নেবেন। বোর্ডে থাকবেন গভর্নর, গভর্নরের মনোনীত দুই উপ-গভর্নর এবং তার প্রস্তাবিত তালিকা থেকে সরকারের নিয়োগপ্রাপ্ত আরও আট পরিচালক। কোনো বর্তমান সরকারি কর্মকর্তা বোর্ডে থাকতে পারবেন না এবং প্রস্তাবিত তালিকার বাইরে কাউকে নিয়োগ দেওয়া যাবে না।

বর্তমানে অর্থ বিভাগের সচিব, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান বোর্ড সদস্য—তাদের বাদ দেওয়ার প্রস্তাব রয়েছে খসড়ায়।

বোর্ডকে পূর্ণ তদারকি ও কৌশলগত নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা দেওয়া হবে, যাতে তারা ব্যাংকের স্বায়ত্তশাসন রক্ষায় প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নিতে পারে।

মুদ্রানীতি ও বিনিময় হার নীতি সমন্বয়ের জন্য একটি সমন্বয় পরিষদ গঠিত হবে, যার সভাপতি হবেন অর্থমন্ত্রী। সদস্য হিসেবে থাকবেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, বাণিজ্যমন্ত্রী, পরিকল্পনামন্ত্রী এবং অর্থ বিভাগের সচিব।

গভর্নর ও উপ-গভর্নরের মেয়াদ হবে ছয় বছর, যা একবার নবায়নযোগ্য। তারা সংসদ সদস্য, স্থানীয় সরকার প্রতিনিধি বা অন্য কোনো সরকারি পদে থাকতে পারবেন না এবং অন্য কোনো সরকারি বেতনের পদে থাকতে পারবেন না। প্রধানমন্ত্রীর সুপারিশ ও সংসদের অনুমোদনের ভিত্তিতে রাষ্ট্রপতি তাদের অপসারণ করতে পারবেন।