
এখন থেকে ১০ লাখ টাকার বেশি মেয়াদি আমানত বা সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ ও ২০ লাখ টাকার বেশি ঋণ গ্রহণের আগে বাধ্যতামূলকভাবে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে হবে। সরকারের গেজেটের ভিত্তিতে তফসিলি সব ব্যাংককে এই নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ নিয়ে সরকার গেজেট জারি করেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক এক প্রজ্ঞাপনে সব ব্যাংককে এই নির্দেশনা পালনের জন্য চিঠি দিয়েছে। গেজেটে বলা হয়েছে, একজন ব্যক্তি যদি ১০ লাখ টাকার বেশি মূল্যের মেয়াদি আমানত খুলতে চান বা তা চালু রাখতে চান, তাহলে তাঁকে সংশ্লিষ্ট অর্থবছরের আয়কর রিটার্নের প্রমাণপত্র জমা দিতে হবে। একইভাবে ২০ লাখ টাকার বেশি ঋণ গ্রহণের ক্ষেত্রেও একই শর্ত প্রযোজ্য হবে।
এ ছাড়া বড় অঙ্কের সঞ্চয়পত্র কেনা, কোনো কোম্পানির পরিচালক বা স্পনসর শেয়ারহোল্ডার হওয়া, আমদানি-রপ্তানি নিবন্ধন সনদ নবায়ন, ট্রেড লাইসেন্স বা পেশাজীবী লাইসেন্স নবায়ন, জমি বা ফ্ল্যাট রেজিস্ট্রেশন এবং গ্যাস ও বিদ্যুৎ–সংযোগপ্রাপ্তিসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রমে রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এ ছাড়া ড্রাগ লাইসেন্স, পরিবেশ ছাড়পত্র, অগ্নিনির্বাপণ ছাড়পত্র, ট্রলার ও নৌযানের জরিপ সার্টিফিকেট এমনকি স্কুলে শিশুর ভর্তি কিংবা আগ্নেয়াস্ত্র লাইসেন্স গ্রহণের মতো ক্ষেত্রেও রিটার্ন দাখিলের প্রয়োজন হবে। বলা হয়েছে, দ্বৈত কর পরিহার–সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক চুক্তির আলোকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যাতে দেশীয় আইন আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ থাকে।
সম্প্রতি এ–বিষয়ক একটি গেজেট প্রকাশ করেছে সরকার। সে অনুযায়ী, এসব আর্থিক লেনদেন ও কার্যক্রমের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের আয়কর রিটার্ন জমা দিতে হবে। তা না হলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বা কর্তৃপক্ষ সেবা দিতে বাধ্য থাকবে না। এসব সেবা নিতে গিয়ে কেউ যদি রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র না দেখান, তাহলে সেবা দেবেন না সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। যদি কোনো কারণে সেবা দেন, তাহলে এই কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান আছে।
ব্যাংক কর্মকর্তারা অবশ্য বলছেন, এতে সরকারের রাজস্ব আয়ে গতি বাড়লেও ব্যাংক আমানত ও সঞ্চয়পত্র বিক্রিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। কারণ, ১০ লাখ টাকার বেশি জমা করলেই রিটার্ন দিতে হবে।