ঢাকা   সোমবার ০৪ আগস্ট ২০২৫, ২০ শ্রাবণ ১৪৩২

রেকর্ড ছোঁয়ার পর ধস: শেয়ারবাজারে অর্ধশত পয়েন্ট হার

শেয়ারবাজার

শেয়ারবিজনেস ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৭:১৮, ৪ আগস্ট ২০২৫

রেকর্ড ছোঁয়ার পর ধস: শেয়ারবাজারে অর্ধশত পয়েন্ট হার

 বিগত কয়েক দিনের ধারাবাহিক বড় উত্থানের পর আজ সপ্তাহের দ্বিতীয় কর্মদিবস সোমবার (০৪ আগস্ট) বাজারে দেখা গেছে একটি স্বাভাবিক সংশোধন। বাজার বিশ্লেষকদের মতে, এটি একটি সুস্থ ও প্রত্যাশিত বাজারচিত্র—যেখানে বড় উত্থানের পর কিছুটা মুনাফা তুলে নেওয়ার কারণে বিনিয়োগকারীরা সাময়িক বিরতি নিয়েছেন। তবে সামগ্রিকভাবে বাজার এখনও স্থিতিশীল এবং বিনিয়োগবান্ধব পর্যায়ে রয়েছে।

গত ৩০ জুন থেকে শুরু হওয়া শেয়ারবাজারের ইতিবাচক ধারা বিশেষভাবে দৃশ্যমান হয় ২৩ জুলাইয়ের পর থেকে। এরপর ২৯ জুলাই পর্যন্ত মাত্র তিন কর্মদিবসেই সূচক বেড়ে যায় ২৩৮ পয়েন্ট। রোববার ডিএসইর সূচক ৯৩ পয়েন্ট বেড়ে এক বছরের সর্বোচ্চ দৈনিক উত্থানের রেকর্ড গড়ে, যা বাজারে বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাবর্তনের স্পষ্ট বার্তা দেয়।


আজ সোমবার দিনের শুরুতে বাজার ছিল ইতিবাচক। সূচক একসময় ২৪ পয়েন্ট পর্যন্ত ঊর্ধ্বমুখী হয়, যা প্রমাণ করে বাজারে ক্রয়চাপ এখনও সক্রিয় রয়েছে। তবে দিন শেষে সূচকে ৫০ পয়েন্টের একটি সংশোধন দেখা গেছে, যা স্বাভাবিকভাবেই একটি বিরতির ইঙ্গিত দেয়।

লেনদেনের দিক থেকেও গতকাল ১ হাজার ১৩৭ কোটির উপরে ছিল, যা ছিল গত এক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। কিন্তু সংশোধনের তাড়ায় আজ তা ৯১১ কোটিতে নেমে এসেছে। বিশ্লেষকদের মতে, এটি বড় ধরনের পতন নয় বরং বাজারকে টেকসই রাখার প্রক্রিয়ার অংশ।

বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, দীর্ঘ সময় পর বিনিয়োগকারীদের মধ্যে যে আস্থা তৈরি হয়েছে তা বজায় রাখতে বাজারের এমন স্বাভাবিক ওঠানামা প্রয়োজন। রেকর্ড উত্থানের পর একটি স্বল্পমেয়াদি সংশোধন ভবিষ্যতের জন্য বাজারকে আরও স্থিতিশীল করে তোলে।

ডিএসইর বর্তমান অবস্থান বিশেষ করে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ, বড় পুঁজির শেয়ারে চাপ কমে যাওয়া এবং অর্থনৈতিক সূচকে ইতিবাচক প্রবণতা বাজারকে ধীরে ধীরে দীর্ঘমেয়াদি প্রবৃদ্ধির পথে নিয়ে যেতে সহায়তা করছে।

সোমবারের বাজার পর্যালোচনা

আজ ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৫০.২৩ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৪৮৫.৯০ পয়েন্টে, যা গত ১০ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। এদিন অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসইএস ৮.০৬ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ১৮৫.৪৯ পয়েন্টে। আর ডিএসই-৩০ সূচক ২০.৫৩ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ২ হাজার ১২৯.৯২ পয়েন্টে।

আজ ডিএসইতে মোট ৩৯৭টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ১২২টির দর বেড়েছে, ২০৭টির দর কমেছে এবং ৬৮টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।


ডিএসইতে আজ মোট ৯১১ কোটি ৭৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ১৩৭ কোটি ৪০ লাখ টাকার। আগের দিনের তুলনায় লেনদেন কমেছে ২২৫ কোটি ৬৬ রাখ টাকা।

এদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) আজ ১০ কোটি ৫৬ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগেরদিন সিএসইতে ২০ কোটি ৬ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছিল।

আজ সিএসইতে লেনদেন হওয়া ২২৭টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে ৯০টির, কমেছে ১১৩টির এবং পরিবর্তন হয়নি ২৪টির।

এদিন সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৮৬.১৯ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ৩৮৬.২৪ পয়েন্টে। আগেরদিন সূচক সিএএসপিআই ২৭০.০৫ পয়েন্ট বেড়েছিল।