
ঈদুল আজহার পর রাজধানীর বাজারে ক্রেতা সংকটে মুরগি, গরু, খাসি ও ইলিশসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম বেশ কমে গেছে। কোরবানির মাংস এখনো ঘরে থাকায় অনেকেই বাজারমুখী হচ্ছেন না। এর প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়েছে ব্রয়লার মুরগির ওপর।
রাজধানীর মোহাম্মদপুর, কারওয়ান বাজারসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, যেখানে ঈদের আগে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছিল ১৮০–২০০ টাকায়, সেখানে এখন তা নেমে এসেছে ১৫০–১৬০ টাকায়। কেউ কেউ একসঙ্গে কয়েক কেজি কিনলে ১৫০ টাকাতেও পাচ্ছেন।
বিক্রেতারা বলছেন, ঈদের পরও অনেকেই ঢাকায় ফেরেননি। যাঁরা ফিরেছেন, তাঁদের ঘরেই এখনো কোরবানির মাংস রয়েছে। বাজারে ক্রেতা কম হওয়ায় লোকসান ঠেকাতে কম দামে বিক্রি করছেন তাঁরা। মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটের বিক্রেতা আরশাদ মিয়াজি জানান, তিনি ১৪০–১৪৫ টাকায় মুরগি কিনে ১৫০–১৬০ টাকায় বিক্রি করছেন। আগের তুলনায় তাঁর দৈনিক বিক্রি ১৫০–২০০টি মুরগি থেকে নেমে এসেছে মাত্র ৬০–৭০টিতে।
সোনালি মুরগির ক্ষেত্রেও একই চিত্র। কয়েক দিন আগেও যা ২৮০–৩২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছিল, এখন তা ২৪০–২৮০ টাকায় নেমে এসেছে। হাইব্রিড সোনালির দাম আরও কম, কেজিতে ২৪০–২৫০ টাকা।
ডিমের দামেও কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে। আগে যেখানে প্রতি ডজন ডিম ১২৫–১৩০ টাকা ছিল, এখন তা বিক্রি হচ্ছে ১২০–১২৫ টাকায়।
এছাড়া, গরু ও খাসির মাংসের দোকানগুলোও এখন বেশির ভাগ বন্ধ। কিছু খোলা দোকান সামাজিক অনুষ্ঠানের অর্ডার সরবরাহ করলেও খোলাবাজারে বিক্রি নেই বললেই চলে। তাই দাম কেজিতে ৫০–১০০ টাকা পর্যন্ত কমে গেছে। এখন খাসির মাংস ১,০০০–১,১০০ টাকায় এবং গরুর মাংস ৭০০–৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ইলিশ মাছের বাজারেও পড়েছে ঈদের প্রভাব। ৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ এখন ১,৪০০–১,৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা ঈদের আগের তুলনায় ২০০–৪০০ টাকা কম।
বিক্রেতারা বলছেন, ক্রেতা না থাকায় লাভের চিন্তা বাদ দিয়ে এখন চাহিদা মেটানোই বড় চ্যালেঞ্জ। দাম কমায় খুশি ক্রেতারা, তবে অনেকেই ভাবছেন—এটা কি শুধু কোরবানির প্রভাব, নাকি বাজার সিন্ডিকেটে ভাঙন ধরেছে?