
২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে ১৯৭৪ সালের জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার ও আহতদের জন্য ১,৫০০ কোটি টাকার একটি বিশেষ তহবিল গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এই তহবিল থেকে দেওয়া হবে এককালীন আর্থিক সহায়তা, মাসিক সম্মানী ভাতা, চিকিৎসা ব্যয়, পুনর্বাসন, প্রশিক্ষণ এবং ঢাকার মিরপুরে ফ্ল্যাট।
অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, শহীদ ও আহতদের জন্য মিরপুরে ফ্ল্যাট নির্মাণে বরাদ্দ থাকতে পারে প্রায় ৭৬১ কোটি টাকা। এককালীন সহায়তা বাবদ বরাদ্দ হতে পারে ২৫০ কোটি টাকা। বাকি অর্থ ব্যয় হবে চিকিৎসা, প্রশিক্ষণ, সম্মানী ও পুনর্বাসন কার্যক্রমে।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, গেজেটভুক্ত শহীদ পরিবারের সংখ্যা ৮৩৪ এবং আহত ১২,০৪৩ জন। চলতি অর্থবছরে ২৩২ কোটি টাকার অনুদান দেওয়া হলেও নতুন বাজেটে এই পরিমাণ প্রায় তিনগুণ বেড়ে দাঁড়াবে ৬৩৮ কোটিতে।
প্রত্যেক শহীদ পরিবারকে দেওয়া হবে এককালীন ৩০ লাখ টাকা। আহতদের চিকিৎসা, মাসিক সম্মানী ও পুনর্বাসনে বরাদ্দ থাকবে প্রায় ৩৯০ কোটি টাকা। ক শ্রেণির (অতি গুরুতর আহত) ৪৯৩ জনকে মাসে ২০ হাজার, খ শ্রেণির (গুরুতর আহত) ৯০৮ জনকে ১৫ হাজার এবং গ শ্রেণির (সীমিত আহত) ১০,৬৪৮ জনকে ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে।
শ্রেণির বাইরে থাকা আহতদের দেওয়া হবে এককালীন ২-৩ লাখ টাকা এবং পর্যায়ক্রমে ৫০ হাজার থেকে ৫ লাখ টাকার চিকিৎসা অনুদান। শহীদ পরিবারকে ১,২৫০ বর্গফুট ও ক শ্রেণির আহতদের ১,০০০ বর্গফুটের ফ্ল্যাট দেওয়া হবে। এসব ফ্ল্যাট হবে মিরপুর-১৪ ও ৯ নম্বর এলাকায়, থাকবে সব নাগরিক সুবিধা।
পাশাপাশি, কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য প্রশিক্ষণ ও সহায়তার ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে। সরকার পিকেএসএফসহ বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতায় আহতদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দেবে, যেমন ফ্রিল্যান্সিং, কৃষি খামার, মোবাইল সার্ভিসিং ও ড্রাইভিং। থাকবে চিকিৎসা ও উচ্চশিক্ষার বিনামূল্যে সুযোগ। আর্থিক সহায়তা পাঠানো হবে সরাসরি ব্যাংক বা মোবাইল একাউন্টে।
এই উদ্যোগ বাস্তবায়নে গঠিত হবে ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান অধিদপ্তর’। সরকারের লক্ষ্য, শহীদ ও আহতদের প্রতি রাষ্ট্রের মর্যাদাপূর্ণ দায়িত্ব পালন নিশ্চিত করা।