
২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম দশ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) বাংলাদেশ সরকার ৩৫০ কোটি ডলার বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করেছে, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ২৫ শতাংশ বেশি। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) হালনাগাদ প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, চলতি অর্থবছরের ঋণ পরিশোধের হার বেড়ে যাওয়ার পেছনে রয়েছে বিগত সময়ের নেওয়া বড় অঙ্কের মেগা প্রকল্প ও বাজেট সহায়তার ঋণের গ্রেস পিরিয়ড শেষ হয়ে যাওয়া এবং বাজারভিত্তিক উচ্চ সুদের চাপ।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত অর্থবছরের একই সময়ে বিদেশি ঋণ পরিশোধের পরিমাণ ছিল ৩৩৭ কোটি ডলার। আর তার আগের বছরের জুলাই-এপ্রিল সময়ে ঋণ ও সুদ মিলিয়ে পরিশোধ হয়েছিল ২৮১ কোটি ডলার। সে তুলনায় চলতি অর্থবছরে পরিশোধ বেড়েছে ২৪.৭৩ শতাংশ।
বিশ্লেষণে দেখা যায়, আসল অর্থ পরিশোধে সবচেয়ে বেশি বৃদ্ধি হয়েছে—৩২.৮৬ শতাংশ। এ দশ মাসে সরকার ২০০ কোটিরও বেশি ডলার (২.০২১ বিলিয়ন) আসল পরিশোধ করেছে, যেখানে আগের বছর এ সময় আসল পরিশোধ ছিল ১৬৬ কোটি ডলার।
সুদ পরিশোধেও ঊর্ধ্বগতি দেখা গেছে। চলতি অর্থবছরে এপ্রিল পর্যন্ত সুদ পরিশোধ করা হয়েছে প্রায় ১২৯ কোটি ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১২.৯৫ শতাংশ বেশি।
অর্থনীতিবিদদের মতে, অতীতে নেওয়া উচ্চ শর্তযুক্ত ঋণ এবং সংক্ষিপ্ত মেয়াদে পরিশোধের বাধ্যবাধকতা বর্তমান ঋণচাপ বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। অনেক ঋণের ক্ষেত্রে সুদের হারও ছিল তুলনামূলক বেশি। ফলে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের বোঝা শুধু বেড়েই চলেছে, যা ভবিষ্যতে দেশের বৈদেশিক রিজার্ভ ও রাজস্ব খাতে বাড়তি চাপ সৃষ্টি করতে পারে।