
একদিকে টানটান সম্পর্কের টানাপোড়েন, অন্যদিকে প্রতিশোধের আঁচে পুড়ে যাওয়া অতীত—এই দুইয়ের মিশেলে নির্মিত হয়েছে সাত পর্বের ওয়েব সিরিজ ‘ফ্যাঁকড়া’, যা আজ মুক্তি পাচ্ছে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম বঙ্গ-তে। সিরিজের নামের মতোই শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা যেন ছিল একেবারে ফ্যাঁকড়াজনক!
২০২৩ সালের আগস্টে যখন শুটিং শুরু হয়, তখন দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ছিল অস্থির। কারফিউ, নিরাপত্তা বাহিনীর কড়াকড়ি আর অজানা আশঙ্কার মধ্যে ঢাকা-মানিকগঞ্জ ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে ১৩ দিন ধরে চলে শুটিং। এমনকি একবার গ্রামবাসীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে এগিয়ে এসেছিলেন—শুটিং ইউনিটের বিশাল বহর দেখে ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন তাঁরা।
সিরিজটির পরিকল্পনা করেন নির্মাতা আসিফ চৌধুরী, যিনি এর আগে ছিলেন একজন শিল্প নির্দেশক। কাজ করেছেন ‘ঢাকা অ্যাটাক’-এর মতো বড় প্রজেক্টে, তবে ‘ফ্যাঁকড়া’ই তাঁর নির্মিত প্রথম সিরিজ। সীমিত বাজেটে শুরু হলেও পরে যুক্ত হয় ওটিটি প্ল্যাটফর্ম বঙ্গ।
‘ফ্যাঁকড়া’ মূলত সম্পর্ক, অতীত আর প্রতিশোধের গল্প। এখানে কেউই ক্লাসিক অর্থে “নায়ক” নয়। বরং সবাই নিজ নিজ অতীত নিয়ে জড়িত একটি জটিল গল্পে, যা দর্শককে শেষ পর্যন্ত টানতে বাধ্য করবে। সিরিজে রয়েছে ৬-৭টি প্রধান চরিত্র, যাদের সবারই আছে এক একটি মোড় ঘোরানো ব্যাকস্টোরি। চিত্রনাট্য লিখেছেন নেয়ামত উল্লাহ ও আহাম্মদ সাদ।
অভিনয় করেছেন শ্যামল মাওলা, নিশাত প্রিয়ম, নিদ্রা দে নেহা, পার্থ শেখ, সারাহ আলম, মীর রাব্বি, এ কে আজাদ সেতু, হাসনাত রিপনসহ আরও অনেকে। নবীন ও অপেক্ষাকৃত কম পরিচিত শিল্পীদের নিয়ে সিরিজটি বানিয়েছেন নির্মাতা, কারণ তাঁর লক্ষ্য ছিল—“সততার সঙ্গে গল্প বলা”।
অভিনেত্রী নিদ্রা দে নেহা জানান, এক রাতের ডিনারে নির্মাতা তাঁর খাওয়ার সরলতায় খুঁজে পান চরিত্র ‘গোলাপি’-কে। আর শ্যামল মাওলা বলেন, সিরিজের গল্প এতটাই রোমাঞ্চকর যে একটুও ভাবেননি কাজটি করতে।
সিরিজটির টিজারে লেখা, “ভুলে মৃত্যু, পিছু নেয় প্রতিশোধ। সময় চলছে, পালানোর নয়!”—এই ট্যাগলাইনই ইঙ্গিত দেয়, ‘ফ্যাঁকড়া’ শুধুই সম্পর্কের গল্প নয়, এটি জীবনের অনিবার্য মোড় ঘোরানো এক নাটকীয় যাত্রাও।
নির্মাতা জানিয়েছেন, দর্শকদের সাড়া পেলে দ্বিতীয় সিজনের পরিকল্পনাও রয়েছে।