
প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী’ উপলক্ষ্যে বাণী প্রদান করেছেন:
“উপমহাদেশের অন্যতম প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আমি শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও অ্যালামনাইসহ বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সকল সদস্যকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই।
প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উচ্চশিক্ষার প্রসার, জ্ঞানচর্চা ও গবেষণায় অনন্য ভূমিকা রেখে আসছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে কেন্দ্র করে আমাদের রাজনৈতিক, আর্থসামাজিক ও সাংস্কৃতিক জাগরণ ঘটেছে এবং এরই ক্রমধারায় অভ্যুদয় ঘটেছে স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্রের। ভাষা আন্দোলন, মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং জুলাই গণ-অভ্যুত্থানসহ বাংলাদেশের সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলন সংগ্রামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষকদের ঐতিহাসিক ভূমিকা সর্বজনবিদিত।
বিগত ফ্যাসিবাদী শাসনামলের অন্যায়-অত্যাচার ও স্বৈরাচারের শৃঙ্খল ভেঙে আজ আমরা বৈষম্যমুক্ত ‘নতুন বাংলাদেশ’ বিনির্মাণের লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছি। প্রাণের এই বাংলাদেশকে নতুনভাবে গড়ে তুলতে প্রয়োজন প্রগাঢ় দেশপ্রেম, মানবিকবোধ ও মুক্তবুদ্ধিসম্পন্ন দক্ষ মানবসম্পদ। আমাদের নতুন প্রজন্মকে ভবিষ্যৎ নেতৃত্বের উপযোগী করে গড়ে তুলতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আরো সক্রিয় ও কার্যকর অবদান রাখতে পারে। এই প্রেক্ষিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এবারের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর প্রতিপাদ্য-‘বৈষম্যহীন ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ বিনির্মাণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়’- অত্যন্ত সময়োপযোগী হয়েছে বলে আমি মনে করি।
বিশ্বায়ন ও চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের এই যুগে নতুন উদ্ভাবন, গবেষণার ক্ষেত্র সম্প্রসারণ এবং গবেষণালব্ধ জ্ঞান দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজে লাগাতে আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। আমাদের শিক্ষার্থীদেরও সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে অর্জিত জ্ঞানের সর্বোত্তম ব্যবহার করে একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনে আত্মনিয়োগ করতে হবে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস ভবিষ্যতেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বমানের উচ্চশিক্ষা প্রদানে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে এবং একটি জ্ঞানভিত্তিক সমাজ ও দেশ বিনির্মাণে কাঙ্ক্ষিত অবদান রাখবে।
আমি ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস’ উপলক্ষ্যে আয়োজিত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করছি।”