ঢাকা   শনিবার ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২

গোয়ালন্দে দোকানঘর দখল ও মালামাল লুটের অভিযোগ

গ্রামবাংলা

গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৪:১০, ১১ জুলাই ২০২৫

গোয়ালন্দে দোকানঘর দখল ও মালামাল লুটের অভিযোগ

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে ১৬ বছর আগে ক্রয় করে ভোগদখল করা দোকানঘরসহ এক শতাংশ জমি জোরপূর্বক দখলের চেষ্টা ও দোকান ঘরে থাকা ১০ লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) দুপুরে গোয়ালন্দ প্রেসক্লাবের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী মো. আব্দুল আউয়াল মোল্লা (৪৫)। তিনি উপজেলার দৌলতদিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ দৌলতদিয়া গ্রামের মো. আব্দুল করিম মোল্লার ছেলে।


সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মো. আউয়াল মোল্লা জানান, তার ছোট ভাই সৌদি প্রবাসী মো. আব্দুল বাতেন মোল্লা ১৬ বছর আগে গোয়ালন্দ শহরের প্রধান সড়কের কল্পনা ক্লিনিকের সামনে চৌচালা টিনের ৩ সার্টার বিশিষ্ট দোকানঘরসহ ১ শতাংশ জমি হেলাল মন্ডলের চাচা আহাম্মদ আলী মন্ডলের কাছ থেকে ক্রয় করেন। এরপর থেকেই ওই দোকান ও জমি ভোগ ক্রয়সূত্রে ভোগদখল করে আসছেন তার ভাই বাতেন মোল্লা।


কিন্তু সম্প্রতি মৃত কাশেম আলী মন্ডলের ছেলে হেলাল মন্ডল তার লোকজন নিয়ে  জমি নিজেদের দাবি করে ভয়ভীতি দেখাতে থাকেন। বর্তমানে আব্দুল বাতেন মোল্লা সৌদি আরবে অবস্থান করায় ভাইয়ের পক্ষ হয়ে আ. আউয়াল বিষয়টি নিয়ে রাজবাড়ী অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মিস পিটিশন মামলা (নম্বর- ৩০১/২০২৫) দায়ের করেন। তিনি ফৌজদারি কার্যবিধির ১৪৪/১৪৫ ধারায় আবেদনও করেন। আদালতের নির্দেশে গোয়ালন্দঘাট থানা পুলিশ চলতি বছরের ২৩ জুনে ওই স্থানে গিয়ে নোটিশ জারি করে এবং সব পক্ষকে আদালতের নির্দেশ মেনে চলার অনুরোধ জানায়।


আব্দুল আউয়াল অভিযোগ করেন, আদালতের আদেশ অমান্য করে ৪ জুলাই সকাল সাড়ে ১০টার দিকে অভিযুক্তরা দোকানের তালা ভেঙে নতুন তালা লাগিয়ে জোর করে দখলের চেষ্টা চালায়। এসময় দোকানের উপরে থাকা ‘রুবি স্টিল কিং’ নামের সাইনবোর্ড খুলে সেখানে ‘মায়ের দোয়া ভাই ভাই স্টোর’ নামে একটি ব্যানার লাগায় এবং দোকানে থাকা ১০ লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। আ. আউয়াল আরো জানান, তিনি বিষয়টি জানতে পেরে ঘটনাস্থলে গেলে তাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে সেখান থেকে তাড়িয়ে দেয় অভিযুক্তরা। এসময় তিনি জীবনের নিরাপত্তা হুমকির মধ্যে রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন।


সংবাদ সম্মেলনে তিনি প্রশাসনের হস্তক্ষেপ ও যথাযথ আইনি ব্যবস্থার মাধ্যমে জমি, দোকানঘর ও ১০ লক্ষাধিক টাকার মালামাল ফিরে পাওয়ার জন্য সু-বিচার কামনা করেন।


সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত অভিযুক্ত হেলাল মন্ডলের মা ছামিমা বেগম জানান, তার স্বামী জীবিত থাকা অবস্থায় তাদের জ্ঞাতস্বরে তার দেবর আহমেদ মন্ডল ওই ১ শতাংশ জমি ঘরসহ বিক্রি করে। এখন তার ছেলে অন্যায়ভাবে সেই জমি ও ঘর দাবি করছে। তার কথাও শুনছে না। 
এসময় তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ‘শেষ বয়সে আমি কোন মিথ্যে কথা বলতে পারবো না।’


অভিযুক্ত হেলাল মন্ডলের চাচা আহমেদ মন্ডল বলেন, ‘১৬ বছর আগে আমার প্রয়োজনে আমি ১ শতাংশ জমি ঘরসহ বিক্রি করি। এখন সেই জমি আমার ভাতিজা দাবি করছে। এটা কঠিন জালিয়াতি ছাড়া কিছুই না। যারা আমার জমি ক্রয় করেছে, তারা আমার কোন আত্মীয়-স্বজন না, তাই বলে তাদের উপর কোন জুলুম হোক তা আমি চাই না।’


এ বিষয়ে অভিযুক্ত হেলাল মন্ডলের কাছে জানতে চাইলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমার চাচা আহাম্মদ আলী যে ১ শতাংশ জমি বাতেন মোল্লার কাছে বিক্রি করেছেন সেটা ৪৬৯ নং দাগের সম্পত্তি। কিন্তু বর্তমানে যে দোকান ও জমি নিয়ে বিরোধ, সেটি ৬৯৭ দাগ, বিএস খতিয়ান ১৭১, যা আমার বাবার ক্রয়কৃত সম্পত্তি।’


তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের কাগজপত্র সবার জন্য উন্মুক্ত, আপনারা চাইলে দেখতে পারেন। যদি কাগজপত্রে দোকানঘর বাতেন মোল্লার হয় তাহলে তাকে বুঝিয়ে দেওয়া হবে।’