০৮ নভেম্বর ২০১৬ মঙ্গলবার, ০৭:২৩ পিএম
শেয়ার বিজনেস24.কম
গত বছরের মতো এবারও ঢাকা মহানগরীতে বেসরকারি স্কুলে শিক্ষার্থী ভর্তিতে ৪০ শতাংশ এলাকা কোটা সংরক্ষণের বিধান রেখে নীতিমালা জারি করেছে সরকার।
আগামী শিক্ষাবর্ষেও ঢাকা মহানগরীর কোন বেসরকারি স্কুলে সেই এলাকার ৪০ভাগ শিক্ষার্থীকে আগে ভর্তি করতে হবে। বাকি আসনে এলাকার বাইরের শিক্ষার্থীরা ভর্তি করতে হবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে মঙ্গলবার ‘বেসরকারি স্কুল/স্কুল এন্ড কলেজে মাধ্যমিক, নিম্নমাধ্যমিক ও সংযুক্ত প্রাথমিক স্তরে শিক্ষার্থী ভর্তি নীতিমালা’ জারি করা হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, ঢাকা মহানগরীর বেসরকারি স্কুলগুলোতে ভর্তির ক্ষেত্রে স্কুল সংলগ্ন ক্যাচমেন্ট এরিয়ার শিক্ষার্থীদের জন্য ৪০ শতাংশ কোটা সংরক্ষণ করতে হবে। অবশিষ্ট আসনগুলো আগের নিয়ম অনুযায়ী সকলের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। একই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পঞ্চম শ্রেণী থেকে ষষ্ঠ শ্রেণীতে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের ভর্তির ক্ষেত্রে ক্যাচমেন্ট এরিয়ার কোটা প্রযোজ্য হবে না। একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান একই ক্যাচমেন্ট এরিয়ায় অবস্থিত হলে শিক্ষার্থীরা উভয় প্রতিষ্ঠানে ভর্তির আবেদন করতে পারবে।
ঢাকা মহানগরীর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক ম্যানেজিং কমিটির সহায়তায় প্রত্যেক স্কুলের ক্যাচমেন্ট এরিয়া (স্কুল সেবা অঞ্চল) নির্ধারণ করবেন। এরিয়া নির্ধারণ নিয়ে একাধিক স্কুলের মধ্যে জটিলতা দেখা দিলে থানা বা উপজেলা শিক্ষা অফিসার বিষয়টি সমাধান করবেন বলে নীতিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে।
‘তবে ক্যাচমেন্ট এরিয়া নির্ধারণ সঠিকভাবে করতে হবে। কোন এলাকা যাতে বাদ না পড়ে সেদিকে সতর্ক থাকতে হবে। থানা বা উপজেলা শিক্ষা অফিসারের আদেশে সন্তুষ্ট না হলে জেলা শিক্ষা অফিসারের কাছে আবেদন করা যাবে। তার আদেশই চূড়ান্ত করে বিবেচিত হবে।’
নীতিমালায় বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার আগে ক্যাচমেন্ট এলাকায় জরিপ করে সম্ভাব্য শিক্ষার্থীদের তথ্য সংগ্রহ করবে। ষষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তির উদ্দেশ্যে প্রাথমিক সমাপনী বা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ সকল শিক্ষার্থীর তথ্যের জন্য জরিপ ছাড়াও ক্যাচমেন্ট এরিয়ায় প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ‘প্রাইমারি স্কুল সার্টিফিকেট’ পরীক্ষায় পাস করা শিক্ষার্থীদের তথ্য সংগ্রহ করবে।
স্কুলের ভর্তির বিজ্ঞপ্তির তারিখে শিক্ষার্থী যে এলাকায় বসবাস করবে সেই এলাকায়ই তার ক্যাচমেন্ট এরিয়া হিসেবে বিবেচিত হবে।
এতে আরো বলা হয়, শিক্ষাবর্ষ শুরুর আগে যুক্তিসঙ্গত সময়ের মধ্যে পরিচালনা কমিটি সভা আহ্বান করে ভর্তি পরীক্ষার তারিখ ও সময় নির্ধারণ করবে। তবে একই ক্যাচমেন্ট এলাকার ভর্তি পরীক্ষা ভিন্ন ভিন্ন সময়ে অনুষ্ঠিত হওয়া নিশ্চিত করতে ঢাকা মহানগরীর বিদ্যালয়গুলোর ভর্তি পরীক্ষার সময়সূচি সংশ্লিষ্ট থানা/উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার নির্ধারণ করবেন।
নীতিমালা অনুযায়ী, প্রথম শ্রেণীতে ভর্তিতে এ বছরও লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী নির্বাচন করতে হবে। শিক্ষার্থীদের বয়স ৬ বা তার বেশি হতে হবে।
দ্বিতীয় থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শূন্য আসনে ভর্তিতে লিখিত পরীক্ষার মাধ্যমে মেধাক্রম অনুসারে শিক্ষার্থী ভর্তি করতে হবে। জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডের তৈরি মেধাক্রম অনুসারে নবম শ্রেণীতে ভর্তির জন্য শিক্ষার্থী বাছাই করতে হবে।
নীতিমালায় আরো বলা হয়েছে, দ্বিতীয় থেকে তৃতীয় শ্রেণী পর্যন্ত ভর্তি পরীক্ষার পূর্ণমান ৫০। এর মধ্যে বাংলা ১৫, ইংরেজি ১৫ এবং গণিতে ২০। পরীক্ষার সময় এক ঘণ্টা। চতুর্থ থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত পূর্ণমান ১০০। এর মধ্যে বাংলা ৩০, ইংরেজি ৩০ ও গণিতে ৪০। ভর্তি পরীক্ষার সময় দুই ঘণ্টা।
নীতিমালা অনুযায়ী, ঢাকা মেট্রোপলিটনসহ এমপিওভুক্ত, আংশিক এমপিওভুক্ত, এমপিওবর্হিভূত প্রতিষ্ঠান ভর্তি ফরমের জন্য সর্বোচ্চ ২০০ টাকা নিতে পারবে।
সেশন চার্জসহ ভর্তি ফি সর্বসাকুল্যে মফস্বল এলাকায় ৫০০ টাকা, পৌর (উপজেলা) এলাকায় এক হাজার টাকা, পৌর (জেলা সদর) এলাকায় দুই হাজার টাকা গ্রহণ করা যাবে। ঢাকা ছাড়া অন্যান্য মেট্রোপলিটন এলাকায় তিন হাজার টাকার বেশি হবে না বলেও নীতিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় অবস্থিত এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো ভর্তির ক্ষেত্রে পাঁচ হাজার টাকার বেশি আদায় করতে পারবে না। ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় অবস্থিত আংশিক এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন এবং এমপিও বহির্ভূত শিক্ষকদের বেতন-ভাতা প্রদানের জন্য শিক্ষার্থীর ভর্তির সময় মাসিক বেতন, সেশনচার্জ ও উন্নয়ন ফিসহ বাংলা মাধ্যমে সর্বোচ্চ আট হাজার টাকা এবং ইংরেজি মাধ্যমে ১০ হাজার টাকা নিতে পারবে। উন্নয়নখাতে কোন প্রতিষ্ঠান ৩ হাজার টাকার বেশি আদায় করতে পারবে না।
একই প্রতিষ্ঠানে বার্ষিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে এক ক্লাস থেকে পরবর্তী ক্লাসে ভর্তির ক্ষেত্রে প্রতি বছর সেশনচার্জ নেওয়া যাবে। তবে পুনঃভর্তির ফি নেওয়া যাবে না।
ভর্তির ফরম ও ভর্তির ফি বাবদ সরকার নির্ধারিত অর্থের চেয়ে বেশি আদায় করলে সরকার এমপিও বাতিলসহ আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে বলে নীতিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে।
নীতিমালা অনুযায়ী, মুক্তিযোদ্ধা/শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের পুত্র-কন্যা, পুত্র-কন্যা না পাওয়া গেলে পুত্র-কন্যার পুত্র-কন্যাদের ন্যূনতম যোগ্যতা থাকা সাপেক্ষে ভর্তির জন্য শূন্য আসনের পাঁচ শতাংশ কোটা সংরক্ষিত থাকবে। প্রতিবন্ধীদের জন্য থাকবে দুই শতাংশ কোটা।
এছাড়া লিল্লাহ বোডিং এ অবস্থানরত সকল শিশুর জন্য শূন্য আসনের এক শতাংশ কোটা ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানদের ভর্তির ক্ষেত্রে ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় শূন্য আসনের দুই শতাংশ কোটা সংরক্ষিত থাকবে।
শেয়ারবিজনেস24.কম এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, তথ্য, ছবি, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট বিনা অনুমতিতে ব্যবহার বেআইনি।