ঢাকা   বুধবার ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭ পৌষ ১৪৩২

খালেদা জিয়ার হাত ধরেই বাংলাদেশের অর্থনীতিতে শুরু হয়েছিল বৈপ্লবিক সংস্কার

শেয়ারবাজার

শেয়ারবিজনেস ডেস্ক

প্রকাশিত: ২০:১৪, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫

সর্বশেষ

খালেদা জিয়ার হাত ধরেই বাংলাদেশের অর্থনীতিতে শুরু হয়েছিল বৈপ্লবিক সংস্কার

১৯৯১ সালে বেগম খালেদা জিয়া যখন প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন, তখন তিনি অর্থনীতিবিদ ছিলেন না। তবে সময়ের পরিক্রমায় আজ অর্থনীতিবিদ ও গবেষকদের বড় একটি অংশ একমত—বাংলাদেশের বর্তমান অর্থনৈতিক রূপান্তরের গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি গড়ে উঠেছিল তাঁর শাসনামলেই।

বিশেষজ্ঞদের মতে, খালেদা জিয়ার সবচেয়ে বড় শক্তি ছিল তাঁর দূরদর্শী নেতৃত্ব ও সঠিক ব্যক্তিকে সঠিক জায়গায় দায়িত্ব দেওয়ার সক্ষমতা। তাঁর রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও দৃঢ় সিদ্ধান্তই নব্বইয়ের দশকে অর্থনীতির গতিপথ বদলে দেয়।

 ভ্যাট ও মুক্তবাজার অর্থনীতির সূচনা

বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেনের মতে, সে সময় বাংলাদেশ ছিল রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত অর্থনীতির বেড়াজালে আবদ্ধ। খালেদা জিয়ার নেতৃত্বেই অর্থনীতি প্রথমবারের মতো ‘শ্বাস নেওয়ার সুযোগ’ পায়।

১৯৯১ সালে তৎকালীন অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমানের মাধ্যমে ভ্যাট (মূল্য সংযোজন কর) চালু করা হয়, যা বর্তমানে বাংলাদেশের রাজস্ব ব্যবস্থার মূল ভিত্তি। বিশেষজ্ঞদের মতে, খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সমর্থন না থাকলে এত বড় সংস্কার বাস্তবায়ন সম্ভব হতো না।

 বৈপ্লবিক অর্থনৈতিক সংস্কার

খালেদা জিয়ার শাসনামলেই—

আমদানির কোটা ব্যবস্থা বাতিল

শুল্ক বাধা কমানো

বেসরকারি ব্যাংকিং খাতের সম্প্রসারণ

বিনিয়োগ বোর্ড ও বেসরকারীকরণ কমিশন গঠন

এর মাধ্যমে ব্যবসা ও বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরি হয়।
২০০৩ সালে মুদ্রা বিনিময় হার বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়া ছিল তাঁর সরকারের সবচেয়ে সাহসী ও যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত, যা রপ্তানি ও বৈদেশিক বাণিজ্যে নতুন দিগন্ত খুলে দেয়।

 শিক্ষা ও সামাজিক খাতে বড় পরিবর্তন

অর্থনীতির পাশাপাশি সামাজিক উন্নয়নেও তাঁর অবদান উল্লেখযোগ্য।
1. প্রাথমিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা
 2.‘শিক্ষার বিনিময়ে খাদ্য’ কর্মসূচি
 3.মেয়েদের জন্য উপবৃত্তি চালু

এসব উদ্যোগের ফলে গ্রামপর্যায়ে শিক্ষার প্রসার ঘটে এবং ভবিষ্যৎ মানবসম্পদ তৈরির ভিত্তি গড়ে ওঠে। কৃষিখাতেও এনজিওগুলোর মাধ্যমে আধুনিক প্রযুক্তি ও সেচ ব্যবস্থার প্রসার ঘটে।

 প্রবৃদ্ধি ও সাহসী সিদ্ধান্ত

অর্থনীতিবিদদের তথ্যমতে—
 আশির দশকের শেষে প্রবৃদ্ধি যেখানে ৪ শতাংশের নিচে ছিল
 খালেদা জিয়ার শাসনামলে তা ৫ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়
 দারিদ্র্যের হার ৫৬% থেকে নেমে আসে প্রায় ৫০%-এ

লোকসানি আদমজী জুট মিল বন্ধ করা কিংবা টেলিকম খাত উন্মুক্ত করার মতো কঠিন সিদ্ধান্ত তিনি রাজনৈতিক ঝুঁকি নিয়েই বাস্তবায়ন করেন।

 অর্থনীতিবিদদের মূল্যায়ন

সিপিডির সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন—

“স্বৈরশাসনের পর বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের যাত্রা শুরু হয় খালেদা জিয়ার নেতৃত্বেই।”

বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতিও তাঁকে দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক রূপান্তরের অন্যতম স্থপতি হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।

সর্বশেষ