দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে আবারও উৎপাদনে ফেরার সুখবর দিয়েছে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠান রহিমা ফুড কর্পোরেশন লিমিটেড। কয়েক মাস ধরে সম্পূর্ণ বন্ধ থাকা কারখানা ও অলস পড়ে থাকা সম্পদ কাজে লাগিয়ে কোম্পানিটির কার্যক্রম পুনরুজ্জীবিত করতে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে স্পন্সর প্রতিষ্ঠান সিটি গ্রুপ। চুক্তিভিত্তিক উৎপাদন ব্যবস্থার মাধ্যমে কোনো বাড়তি মূলধনী বিনিয়োগ ছাড়াই রহিমা ফুডকে আবারও আয়ের ধারায় ফেরানোর কৌশল নিয়েছে গ্রুপটি।
এই লক্ষ্যে গত ১৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত রহিমা ফুডের পরিচালনা পর্ষদের সভায় সিটি এডিবল অয়েল–এর সঙ্গে পাঁচ বছর মেয়াদি একটি চুক্তি অনুমোদন করা হয়। চুক্তি অনুযায়ী, রহিমা ফুড তাদের বিদ্যমান বোতলজাতকরণ সক্ষমতা ব্যবহার করে সিটি এডিবল অয়েলের বিভিন্ন পণ্যের বোতল উৎপাদন করবে। এর মাধ্যমে সিটি গ্রুপ তাদের সাপ্লাই চেইনের একটি অংশ রহিমা ফুডকে হস্তান্তর করছে, যা কোম্পানিটির জন্য নতুন আয় উৎস হিসেবে কাজ করবে।
নারায়ণগঞ্জে অবস্থিত রহিমা ফুডের কারখানাটি চলতি বছরের জুলাই মাসে নারিকেল তেল প্ল্যান্ট এবং আগস্টে কাজু বাদাম প্রক্রিয়াকরণ ইউনিট বন্ধ হওয়ার পর কার্যত অচল হয়ে পড়ে। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে কোম্পানির আর্থিক অবস্থায়। চলতি অর্থবছরের জুলাই–সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে রহিমা ফুডের আয় কমে প্রায় ৭৭ শতাংশ, নেমে আসে মাত্র ৬৭ লাখ টাকায়, পাশাপাশি কোম্পানিকে গুনতে হয় ১০ লাখ টাকার লোকসান।
এই সংকটময় সময়ে সিটি গ্রুপের এই উদ্যোগকে রহিমা ফুডের জন্য এক ধরনের ‘লাইফলাইন’ হিসেবে দেখছেন বাজার বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, কারখানার সক্ষমতা ব্যবহার করে নিয়মিত উৎপাদনে ফিরলে ধীরে ধীরে কোম্পানিটির আর্থিক স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে।
ইতোমধ্যে এই সম্ভাবনার আভাস পেয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণার আগেই শেয়ারবাজারে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। গত ১৪ নভেম্বর থেকে ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে রহিমা ফুডের শেয়ার দর প্রায় ৫৩ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪৪ টাকা ৮০ পয়সায়।
উল্লেখ্য, ব্যবসায়িক মন্দার মধ্যেও বিনিয়োগকারীদের আস্থা ধরে রাখতে গত সমাপ্ত অর্থবছরের জন্য ২ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড প্রদানের সুপারিশ করেছে কোম্পানিটি। বিশ্লেষকদের মতে, সরাসরি নগদ বিনিয়োগ না করে এ ধরনের কৌশলগত সহযোগিতা রহিমা ফুডের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে দীর্ঘমেয়াদে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
























