ঢাকা   রোববার ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ৭ পৌষ ১৪৩২

পুবালী ব্যাংকে ক্ষমতার লড়াই ও অনিয়মের মহোৎসব,

শেয়ারবাজার

শেয়ারবিজনেস ডেস্ক

প্রকাশিত: ২০:০৫, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫

পুবালী ব্যাংকে ক্ষমতার লড়াই ও অনিয়মের মহোৎসব,

শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত দেশের অন্যতম প্রাচীন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান পুবালী ব্যাংক বর্তমানে গভীর সংকটমুখী অবস্থার মধ্যে রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে পরিচালনা পর্ষদে ক্ষমতার লড়াই, আদালতের রায় এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থার নির্দেশনা উপেক্ষা করে অপরিবর্তিত পর্ষদ কাঠামো এবং বৈদেশিক মুদ্রা ও ঋণ বিতরণে একের পর এক গুরুতর অনিয়ম ব্যাংকের সুশাসনকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি অ্যান্ড কাস্টমার সার্ভিসেস ডিপার্টমেন্ট (এফআইসিএসডি) আংশিক তদন্তে প্রকাশ করেছে, ব্যাংকটির কিছু শাখা আমদানি ঋণপত্র (এলসি) নিষ্পত্তির সময় নির্ধারিত বাজার দরের চেয়ে অনেক বেশি অর্থ আদায় করেছে। নিয়ম অনুযায়ী এই অতিরিক্ত অর্থ ব্যাংকের কোষাগারে জমা হওয়ার কথা থাকলেও, তা নির্দিষ্ট কিছু গ্রাহকের অ্যাকাউন্টে সরাসরি স্থানান্তর করা হয়েছে, যা ব্যাংকিং আইন ও বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ নীতিমালা লঙ্ঘন।

তদন্তে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনায় দেখা গেছে, ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে বরিশাল বাজার রোড শাখা থেকে ‘মোহাম্মাদী ইলেকট্রিক ওয়্যার অ্যান্ড মাল্টি প্রোডাক্টস লিমিটেড’ ২ লাখ ২৩ হাজার ডলারের এলসি খোলে। ব্যাংকটি গ্রাহকের কাছ থেকে বাজার দরের চেয়ে প্রতি ডলারে প্রায় ৬.৫ টাকা বেশি আদায় করে এবং সংগ্রহীত প্রায় ১৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা কোষাগারে না জমিয়ে মতিঝিল করপোরেট শাখার গ্রাহক ‘রিফাত গার্মেন্টস লিমিটেড’-এর অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করে। উল্লেখ্য, রিফাত গার্মেন্টস হলো হা-মীম গ্রুপের একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান, যার প্রতিনিধি আব্দুর রাজ্জাক মন্ডল ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের পরিচালক।

এ ধরনের অনিয়ম সিলেট শাখাতেও ধরা পড়েছে, যেখানে ‘মেসার্স হাসান অ্যান্ড ব্রাদার্স’-এর চারটি এলসির অতিরিক্ত ৮ লাখ ৮০ হাজার টাকা একইভাবে রিফাত গার্মেন্টসের চলতি অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করা হয়। এফআইসিএসডির প্রতিবেদনে উল্লেখ আছে, প্রতি ডলারে ৬.৫ থেকে ৮ টাকা অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের প্রমাণ পাওয়া গেছে।

দীর্ঘস্থায়ী অনিয়ম, শীর্ষ ব্যবস্থাপনার যোগসাজশ এবং পর্ষদ পর্যায়ে দুর্বল তদারকির কারণে পুবালী ব্যাংক আজ গভীর সংকটে নিমজ্জিত, এবং দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে।