দেশের শেয়ারবাজারে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই–অক্টোবর ২০২৫) নিট ৬৬ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ৮০৭ কোটি টাকা) শেয়ার বিক্রি করেছেন। রাজনৈতিক অস্থিরতা, ব্যাংক খাতের দুর্বলতা এবং দীর্ঘমেয়াদী আস্থার সংকটের কারণে বিদেশিরা নতুন বিনিয়োগের পরিবর্তে বাজার থেকে পুঁজি তুলে নেওয়ায় এই পরিমাণের নিট বহিঃপ্রবাহ হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের চার মাসে বিদেশি বিনিয়োগের ঋণাত্মক চিত্র গত বছরের একই সময়ের তুলনায় অনেক উদ্বেগজনক। ২০২৪ সালের জুলাই–অক্টোবর মাসে নিট বহিঃপ্রবাহ ছিল মাত্র ৯ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ১০৭ কোটি টাকা)। ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন (ডিবিএ)-এর বিশ্লেষকরা বলেন, ব্যাংক খাতের টালমাটাল অবস্থা এবং মাত্র কয়েকটি ব্যাংকের স্থিতিশীল অবস্থার কারণে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য বাজারে নতুন টাকা আনছে না।
উচ্চ মূল্যস্ফীতি, ক্রয়ক্ষমতার কমে যাওয়া এবং ভোক্তা পণ্য উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলোর আয় হ্রাসও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের প্রভাবিত করছে। পাশাপাশি, ফ্লোর প্রাইস বা সর্বনিম্ন মূল্যসীমার প্রয়োগ, তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর দুর্বল সুশাসন এবং নতুন মানসম্মত কোম্পানির অনুপস্থিতি বিদেশি ফান্ডগুলোকে নিরুৎসাহিত করেছে। এর সঙ্গে দীর্ঘ ১৮ মাস ধরে কোনো নতুন আইপিও অনুমোদন না হওয়াও বাজারের বৈচিত্র্য হারানোর মূল কারণ।
বাজার বিশেষজ্ঞদের মতে, বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনতে একটি সুষ্ঠু ও গণতান্ত্রিক নির্বাচনই একমাত্র বড় ভরসা। তবে কোম্পানিগুলোর স্বচ্ছতা বৃদ্ধি এবং বহুজাতিক কোম্পানিগুলোকে তালিকাভুক্ত করলে দীর্ঘমেয়াদে এই নেতিবাচক ধারা পরিবর্তন সম্ভব।
























