শেয়ারবাজারের অন্যতম সম্পদ ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান রেইস অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট পরিচালিত ১২টি মিউচ্যুয়াল ফান্ডে অনিয়ম ও দুর্বল ব্যবস্থাপনার অভিযোগ তদন্তে নেমেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ ক্ষুণ্ন এবং আইন লঙ্ঘনের মতো গুরুতর অভিযোগ খতিয়ে দেখতে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি ৬টি পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
বিএসইসির মার্কেট ইন্টেলিজেন্স অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন বিভাগ থেকে জারি করা নতুন আদেশে আগের তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি বাতিল করে এই নতুন কমিটিগুলো গঠন করা হয়। প্রতিটি কমিটিকে ৬০ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত শেষ করে কমিশনে প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পুরো তদন্ত প্রক্রিয়ার সমন্বয় করবেন অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ রকিবুর রহমান।
সূত্র জানায়, বিগত সময়ে আইন অমান্যকারী কিছু মিউচ্যুয়াল ফান্ডের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে শৈথিল্য দেখা গেলেও, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বিএসইসির বর্তমান চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ–এর নেতৃত্বে কমিশন আরও কঠোর অবস্থান নিয়েছে। ইতোমধ্যে রেইস অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টকে তদন্তের বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে অবহিত করা হয়েছে এবং কমিশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তদন্তের প্রথম কমিটি, অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ আমদাদুল হক–এর নেতৃত্বে, এবি ব্যাংক ১ম মিউচ্যুয়াল ফান্ড, ইবিএল এনআরবি মিউচ্যুয়াল ফান্ড এবং রেইস অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের নিজস্ব কার্যক্রম খতিয়ে দেখবে।
দ্বিতীয় কমিটি, উপ-পরিচালক মো. রফিকুন্নবী ও রানা দাস–এর তত্ত্বাবধানে, তদন্ত করবে পিএইচপি ১ম মিউচ্যুয়াল ফান্ড এবং পপুলার লাইফ ১ম মিউচ্যুয়াল ফান্ড।
তৃতীয় কমিটি, যুগ্ম পরিচালক সুলতানা পারভীন–এর নেতৃত্বে, ফার্স্ট জনতা ব্যাংক ১ম মিউচ্যুয়াল ফান্ড ও ইবিএল ১ম মিউচ্যুয়াল ফান্ড–এর কার্যক্রম পর্যালোচনা করবে।
অন্যদিকে চতুর্থ কমিটি, উপ-পরিচালক মো. মওদুদ মোমেন–এর নেতৃত্বে, এক্সিম ব্যাংক ১ম মিউচ্যুয়াল ফান্ড এবং ফার্স্ট বাংলাদেশ ফিক্সড ইনকাম ফান্ড–এর আর্থিক অসঙ্গতি অনুসন্ধান করবে।
পঞ্চম কমিটি, যুগ্ম পরিচালক অনু দে ও মো. সাগর ইসলাম–কে নিয়ে গঠিত, আইএফআইসি ব্যাংক ১ম মিউচ্যুয়াল ফান্ড এবং ট্রাস্ট ব্যাংক ১ম মিউচ্যুয়াল ফান্ড–এর অনিয়ম খুঁজে দেখবে।
সবশেষে ষষ্ঠ কমিটি যাচাই করবে রেইস ফাইন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন ফান্ড ও রেইস স্পেশাল অপরচুনিটি ফান্ড—এই দুটি ওপেনএন্ডেড ইউনিট ফান্ডের ব্যবস্থাপনায় কোনো গাফিলতি ছিল কি না।
বর্তমানে রেইস অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট মোট ১২টি ফান্ড পরিচালনা করছে—এর মধ্যে ১০টি তালিকাভুক্ত ক্লোজএন্ড ফান্ড এবং ২টি ওপেনএন্ড ফান্ড। এসব ফান্ডের অর্থ ব্যবস্থাপনা, বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত এবং শেয়ারহোল্ডারদের প্রাপ্য ডিভিডেন্ড বা স্বার্থের বিপরীতে কোনো বেআইনি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে কি না—তা উদঘাটনই এই ৬টি তদন্ত কমিটির প্রধান লক্ষ্য।
























