ঢাকা   সোমবার ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭ অগ্রাহায়ণ ১৪৩২

আইপিও তহবিল আটকে লুব-রেফের আর্থিক ঝুঁকি বাড়ল

শেয়ারবাজার

শেয়ারবিজনেস ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৯:২৮, ১ ডিসেম্বর ২০২৫

আইপিও তহবিল আটকে লুব-রেফের আর্থিক ঝুঁকি বাড়ল

একসময়ের লাভজনক লুব্রিকেন্ট ব্লেন্ডার ও রিফাইনার কোম্পানি লুব-রেফ (বাংলাদেশ) লিমিটেডের আর্থিক অবস্থা এখন ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। ২০২৪–২৫ অর্থবছরে কোম্পানিটি ৬৬ কোটি টাকার লোকসান করেছে। ব্যাংক নিষেধাজ্ঞা এবং কার্যকরী মূলধনের সংকটের কারণে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য প্রথমবার কোনো ডিভিডেন্ড ঘোষণা করা সম্ভব হয়নি। ‘নো ডিভিডেন্ড’ ঘোষণা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শেয়ারের দাম ১৮.৯০% কমে ১০ টাকা ৩০ পয়সায় নেমে আসে।

কোম্পানির তথ্য অনুযায়ী, শেয়ারপ্রতি লোকসান ৪ টাকা ৫৬ পয়সা, যার মূলত বড় অংশ তৈরি হয়েছে অর্থবছরের শেষ তিন মাসে (এপ্রিল-জুন)।

ব্যাংক ঋণ ও কার্যকরী মূলধনের সংকট কোম্পানিটির জন্য দীর্ঘদিনের সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ২০২২ সালের অক্টোবর থেকে প্রধান ব্যাংক সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে এলসি খোলায় জটিলতার কারণে কাঁচামাল আমদানি ব্যাহত হয়। ফলে স্থানীয় বিক্রেতা থেকে চড়া দামে কাঁচামাল কিনে উৎপাদন চালাতে বাধ্য হয়। বর্তমানে কোম্পানির ঋণ প্রায় ৩৯৭ কোটি টাকা, যার সুদ পরিশোধের পরিমাণ ৫০ কোটি টাকা

কোম্পানি তাদের আইপিও তহবিলের ১৩ কোটি ১০ লাখ টাকা ব্যাংকে রাখলেও তারল্য সংকটের কারণে তা ফেরত নিতে পারেনি। নিরীক্ষকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, আগস্ট ২০২৫ পর্যন্ত অব্যয়িত তহবিলের পরিমাণ ১৯ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। এছাড়া এপ্রিল-জুন মাসে কার্যকরী মূলধন ও ভূমি উন্নয়নে ৩৭ কোটি ৪৭ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে।

কোম্পানির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এলসি পুনরুদ্ধার ও সরাসরি আমদানি শুরু করে খরচ কমানোর চেষ্টা চলছে। তবে উচ্চ আর্থিক ব্যয়, ঋণের বোঝা এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতা লুব-রেফের আর্থিক চ্যালেঞ্জ আরও বাড়াচ্ছে।

২০০১ সালে প্রতিষ্ঠিত এবং ২০০৬ সালে বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু করা এই কোম্পানি, ২০২১ সালে শেয়ারবাজার থেকে ১৫০ কোটি টাকা সংগ্রহ করেছিল যন্ত্রপাতি ক্রয় ও ঋণ পরিশোধের জন্য। বর্তমানে আইপিও তহবিলের কার্যকর ব্যবস্থাপনা কোম্পানির আর্থিক স্থিতিশীলতার জন্য প্রধান চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।