ঢাকা   বুধবার ১৯ নভেম্বর ২০২৫, ৫ অগ্রাহায়ণ ১৪৩২

নতুন মার্জিন বিধিমালা ২০২৫: বিনিয়োগকারীদের উদ্বেগ, বাজারের অস্থিরতা

নতুন মার্জিন বিধিমালা ২০২৫: বিনিয়োগকারীদের উদ্বেগ, বাজারের অস্থিরতা

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) সম্প্রতি জারি করা ‘মার্জিন বিধিমালা, ২০২৫’ কার্যকর হওয়ার পর শেয়ারবাজারে তীব্র প্রতিক্রিয়া এবং অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। গত ৬ নভেম্বর গেজেট আকারে প্রকাশিত এই বিধিমালায় মার্জিন ঋণের জন্য একাধিক কঠোর শর্ত আরোপ করা হয়েছে, যার ফলে মূলত ছোট বিনিয়োগকারীরা সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত হচ্ছেন।

নতুন নিয়ম অনুযায়ী, কোনো বিনিয়োগকারীকে মার্জিন ঋণ পাওয়ার যোগ্য হতে হলে তার পূর্ববর্তী এক বছরের গড় বিনিয়োগ ন্যূনতম ৫ লাখ টাকা হতে হবে। ফলে ৫ লাখ টাকার নিচের বিনিয়োগকারীরা নতুন মার্জিন ঋণ নিতে পারবে না। বিদ্যমান ঋণগ্রহীতাদেরও এক বছরের মধ্যে পোর্টফোলিওর মূল্য সীমার মধ্যে আনতে হবে, না হলে জোরপূর্বক শেয়ার বিক্রির (ফোর্স সেল) ঝুঁকি তৈরি হবে।

ছাত্র, গৃহিণী বা অবসরপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের—যাদের নিয়মিত আয়ের উৎস নেই—মার্জিন ঋণের জন্য অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে। মার্জিন ঋণ শুধুমাত্র শেয়ার ক্রয়ের জন্যই ব্যবহার করা যাবে; ক্যাশ উত্তোলন বা অন্য কোনো খাতে স্থানান্তর সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। পোর্টফোলিওর মূল্য ৫–১০ লাখ টাকার জন্য মার্জিন সুবিধার অনুপাত ১:০.৫ এবং ১০ লাখ টাকার বেশি হলে ১:১ নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া, বীমা কোম্পানির শেয়ারের জন্য সর্বোচ্চ মার্জিন সীমা ৫০ শতাংশ।

নতুন নিয়মে গ্রাহকের ইকুইটি প্রয়োজনীয় স্তরের ৭৫ শতাংশের নিচে গেলে বাধ্যতামূলক মার্জিন কল জারি করা হবে। পোর্টফোলিওর মূল্য যদি ৫০ শতাংশ হ্রাস পায়, শেয়ার বিক্রি বাধ্যতামূলক। মার্জিন ঋণের সুদ প্রতি ত্রৈমাসিকে ক্যাশ বা শেয়ার বিক্রির মাধ্যমে পরিশোধ করতে হবে। এছাড়া, ন্যূনতম ৫০ কোটি টাকা ফ্রি-ফ্লোট মার্কেট ক্যাপিটালাইজেশন ছাড়া কোনো কোম্পানির শেয়ার বা আর্থিক সমস্যা থাকা শেয়ার মার্জিন ঋণের জন্য অযোগ্য।

নতুন বিধিমালা প্রকাশের পর বাজারে ব্যাপক দরপতন ও অস্থিরতা দেখা দেয়। এর প্রেক্ষিতে ১২ নভেম্বর হাইকোর্ট নতুন বিধিমালা ২০২৫-এর বৈধতা নিয়ে সরকারের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছে। বিনিয়োগকারীরা এখনো আতঙ্কিত, বিশেষ করে ছোট বিনিয়োগকারীদের জন্য নতুন নিয়মগুলো বড় ধাক্কা হিসেবে ধরা হচ্ছে।