
শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান নাভানা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড বন্ড ইস্যুর মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহের পরিকল্পনায় ব্যর্থ হয়েছে। বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশিত সাড়া না পাওয়ায় কোম্পানিটি নির্ধারিত মেয়াদের আগেই সংগৃহীত অর্থ ফেরত দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
১৫০ কোটি টাকা সংগ্রহের লক্ষ্য থাকলেও নাভানা ফার্মা মাত্র ৮ কোটি টাকা তুলতে সক্ষম হয়। এ পরিমাণ অর্থ দিয়ে উদ্দেশ্য পূরণ সম্ভব নয় বলে সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে ফেরত দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। বিষয়টি বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) অনুমোদনের ওপর নির্ভর করছে।
গত বছরের আগস্ট থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বন্ডের সাবস্ক্রিপশন চালু ছিল। তবে রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে বন্ড বিক্রি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কোম্পানিটি সাবস্ক্রিপশনের সময়সীমা বাড়ানোর জন্য বিএসইসির কাছে আবেদন করলেও নতুন কমিশন সেটি নাকচ করে দেয়।
কোম্পানির সেক্রেটারি লরেন্স শ্যামল মল্লিক সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, “বন্ড থেকে সংগৃহীত অর্থ কোম্পানির লক্ষ্য পূরণ করতে পারেনি। তাই তা ফেরত দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
তবে ব্যাংক ঋণ পরিশোধে বন্ডের অর্থ ব্যবহারের যে পরিকল্পনা ছিল, সেটি কীভাবে মোকাবিলা করা হবে সে বিষয়ে তিনি মন্তব্য করতে রাজি হননি।
২০২৪ সালের মার্চ পর্যন্ত নাভানা ফার্মার স্বল্পমেয়াদী ঋণের পরিমাণ ছিল ৪৬০ কোটি টাকা।
২০২৩ সালের মার্চে নাভানা ফার্মা ১৫০ কোটি টাকার একটি আংশিক রূপান্তরযোগ্য বন্ড ইস্যুর অনুমোদন পায়। প্রতিটি বন্ডের মূল্য ছিল ১ লাখ টাকা এবং মেয়াদ পাঁচ বছর। এর মূল লক্ষ্য ছিল ব্যাংক ঋণ পুনঃঅর্থায়ন। পরিকল্পনা অনুযায়ী, বন্ডের ৬০ শতাংশ (৯০ কোটি টাকা) শেয়ারে রূপান্তর করার কথা ছিল। তৃতীয় বছর থেকে প্রতি বছর ২০ শতাংশ করে বন্ড শেয়ারে রূপান্তরিত হওয়ার কথা এবং বাকি অর্থ পঞ্চম বছরে ফেরত দেওয়ার শর্ত ছিল।
এর আগে, ২০২২ সালে বুক-বিল্ডিং পদ্ধতিতে ৭৫ কোটি টাকা সংগ্রহ করে শেয়ারবাজারে আসে নাভানা ফার্মা। সেই অর্থ দিয়ে একটি উৎপাদন ভবন নির্মাণ, এসভিপিও সুবিধার আধুনিকীকরণ ও সম্প্রসারণ এবং আংশিক ঋণ পরিশোধের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। এ বছরের জুন পর্যন্ত আইপিও তহবিলের ৯৭ শতাংশের বেশি ব্যবহার করেছে কোম্পানিটি।
নাভানা ফার্মা বর্তমানে মানব ও পশুচিকিৎসার ওষুধ উৎপাদন করে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে সরবরাহ করছে। ২০২৪ সালে কোম্পানিটি ১৪ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে। সে বছর শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) দাঁড়ায় ৩ টাকা ৭৭ পয়সা, যা আগের বছর ছিল ৩ টাকা ৫৯ পয়সা।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে কোম্পানির ইপিএস হয়েছে ৩ টাকা ৪৯ পয়সা। আগের বছরের একই সময়ে ইপিএস ছিল ৩ টাকা ৯ পয়সা।