
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী বুধবার বলেছেন, বাংলাদেশের শেয়ারবাজার বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র, যেখানে টেকসই প্রবৃদ্ধির জন্য সীমাহীন সুযোগ বিদ্যমান।
বুধবার (১৩ আগস্ট) রাজধানীর একটি হোটেলে ‘ফরেন ইনভেস্টরস সামিট ২০২৫’-এর ‘বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট: বিকাশ ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক সেশনে তিনি এসব কথা করেন। । এ সম্মেলনের মূল উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে আরও বেশি বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা।
শেয়ারবাজারের বিশাল সম্ভাবনার কথা তুলে ধরে আনিসুজ্জামান চৌধুরী বলেন, এটি বিনিয়োগের জন্য একটি আকর্ষণীয় ক্ষেত্র। তিনি আরও আশ্বস্ত করেন, সরকার এমন একটি টেকসই শেয়ারবাজার গঠনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যেখানে দেশি ও বিদেশি উভয় ধরনের বিনিয়োগকারীই আস্থার সঙ্গে বিনিয়োগ করতে পারবেন।
সম্মেলনে অন্য বক্তারা বলেন, বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ করার জন্য শুধু বাজারের স্থিতিশীলতাই যথেষ্ট নয়, বরং আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার, স্বচ্ছতা এবং দীর্ঘমেয়াদি নীতিগত সমর্থনও জরুরি। বক্তারা আরও বলেন, বৈশ্বিক বিনিয়োগের মানচিত্রে বাংলাদেশ বর্তমানে একটি 'উদীয়মান সীমান্ত বাজার', যা কার্যকর নীতি ও কৌশলগত পরিকল্পনার মাধ্যমে একটি শক্তিশালী বিনিয়োগ গন্তব্যে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা রাখে।
ঢাকার একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারী, নীতিনির্ধারক এবং বাজার বিশেষজ্ঞরা দেশের শেয়ারবাজারের বর্তমান অবস্থা, ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা এবং কৌশলগত পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেন।
সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্য দেন ব্র্যাক ইপিএল স্টক ব্রোকারেজ লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আহসানুর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএসইসি কমিশনার মোহাম্মদ মহসিন চৌধুরী, ব্র্যাক ব্যাংক পিএলসি-র চেয়ারম্যান মেহেরিয়ার এম হাসান, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) পিএলসি-র চেয়ারম্যান মোমিনুল ইসলাম এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) পিএলসি-র চেয়ারম্যান এ কে এম হাবিবুর রহমান।
নির্বাচনের আবহে বিনিয়োগকারীদের উৎসাহ বাড়ছে: আমীর খসরু
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, দেশের এবং বিদেশের নির্বাচনের খবর ছড়িয়ে পড়ায় বিনিয়োগকারীরা নতুনভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
বুধবার (১৩ আগস্ট) রাজধানীর একটি হোটেলে ‘ফরেন ইনভেস্টরস সামিট ২০২৫’-এর ‘বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট: বিকাশ ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক সেশনে তিনি এসব মন্তব্য করেন। সম্মেলনটি আয়োজন করে ব্র্যাক ইপিএল স্টক ব্রোকারেজ লিমিটেড।
আমীর খসরু বলেন, দেশি উদ্যোক্তাদের সঙ্গে বিদেশি বিনিয়োগকারীরাও আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। তার প্রমাণ হিসেবে জাপান থেকে বিশাল একটি ডেলিগেশন বাংলাদেশে এসেছে বিনিয়োগের উদ্দেশ্যে। তিনি আরও বলেন, দেশের অর্থনীতিকে টেকসই ও উচ্চ পর্যায়ে উন্নীত করতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি অপরিহার্য।
তিনি শেয়ারবাজারের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের জন্য এটি শক্তিশালী করতে হবে। বিনিয়োগকারীদের পণ্য ব্র্যান্ডিং, প্রযুক্তিগত ও অর্থনৈতিক সহায়তা নিশ্চিত করতে হবে এবং বিশ্ববাজারে পৌঁছে দিতে হবে। ঋণ বা অর্থ মুদ্রা ছাপানো স্থায়ী সমাধান নয়।
সম্মেলনে প্যানেল ডিসকাশনে বক্তব্য দেন পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান এম মাসরুর রিয়াজ, বিএসইসি কমিশনার মো. সাইফুদ্দিন, কন্টেক্সচ্যুয়াল ইনভেস্টমেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকাও হিরোসি এবং এসিয়া ফ্রন্টায়ার ইনভেস্টমেন্টের ফান্ড ম্যানেজার রুচির দেসাই।
প্রধান উপদেষ্টার অর্থবিষয়ক বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী বলেন, বিশ্বের অনেক দেশে সরকার পরিবর্তনের পর অর্থনীতি সংকটে পড়লেও বাংলাদেশ এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। গণ–অভ্যুত্থানের পরও জিডিপিতে উল্লেখযোগ্য প্রভাব পড়েনি, এবং মূল্যস্ফীতি হ্রাস পেয়েছে। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের শেয়ারবাজার সম্প্রতি বৈশ্বিক শেয়ারবাজারের মধ্যে তৃতীয় স্থান অর্জন করেছে।
অনুষ্ঠানটি ব্র্যাক ইপিএল স্টক ব্রোকারেজের প্রধান নির্বাহী আহসানুর রহমানের স্বাগত বক্তব্যে শুরু হয়। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএসইসি কমিশনার মোহাম্মদ মোহসিন চৌধুরী, ব্র্যাক ব্যাংকের চেয়ারম্যান মেহেরিয়ার এম হাসান, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান মোমিনুল ইসলাম এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান এ কে এম হাবিবুর রহমান। এছাড়াও বক্তব্য দেন ব্র্যাক ইপিএল স্টক ব্রোকারেজের চেয়ারপার্সন ফাহিমা চৌধুরী।