ঢাকা   বৃহস্পতিবার ১০ জুলাই ২০২৫, ২৫ আষাঢ় ১৪৩২

সিনিয়রদের বেইমানিতেই সাতবার ভেঙেছে জাপা: শামীম হায়দার

রাজনীতি

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২০:৩১, ৯ জুলাই ২০২৫

সর্বশেষ

সিনিয়রদের বেইমানিতেই সাতবার ভেঙেছে জাপা: শামীম হায়দার

জ্যেষ্ঠ নেতাদের বেইমানির কারণে জাতীয় পার্টি সাতবার ভেঙেছে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির নবনিযুক্ত মহাসচিব শামীম হায়দার পাটোয়ারী। তিনি বলেছেন, বিগত দিনেও কিছু সিনিয়র নেতা ও প্রেসিডিয়াম সদস্য জাতীয় পার্টির সঙ্গে বেইমানি করেছিল। এ কারণেই জাতীয় পার্টি সাতবার ভেঙেছে। কিন্তু জাতীয় পার্টির তৃণমূল নেতা-কর্মীরা সব সময় পার্টির সঙ্গে ছিল, তৃণমূল নেতা-কর্মীরা কখনোই জাতীয় পার্টির মূলস্রোতের বাইরে যায়নি।

আজ বুধবার দুপুরে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের বনানীর কার্যালয়ে দলের ঢাকা মহানগর উত্তর কমিটির দেওয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে শামীম হায়দার পাটোয়ারী এ কথাগুলো বলেন।

এ প্রসঙ্গে শামীম হায়দার পাটোয়ারী গত ২৫ জুন দলের জেলা ও মহানগর কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের সভার কথা উল্লেখ করেন। ওই সভায় এই নেতারা দলের তিন কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার ও মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নুর বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ এনে তাঁদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান বলে জাতীয় পার্টির এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়।

এ বিষয়ে শামীম হায়দার পাটোয়ারী আজ বলেন, গত ২৫ জুন জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীরা ঢাকায় এসে দলের চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদেরের (জি এম কাদের) প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন প্রকাশ করেন। সেদিনই জাতীয় পার্টির আগামী দিনের পথচলার ফয়সালা হয়ে গেছে।

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের সততা ও স্বচ্ছতা জাজ্বল্যমান—মন্তব্য করে শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, তিনি পাঁচ বছর গুরুত্বপূর্ণ দুটি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ছিলেন, তাঁর বিরুদ্ধে কেউ একটি দুর্নীতির অভিযোগ করতে পারেনি। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারকে তিনি কর্তৃত্ববাদী সরকার বলতেন। আওয়ামী লীগ বারবার চেষ্টা করেও জি এম কাদেরের বিরুদ্ধে কোনো দুর্নীতির মামলা করতে পারেনি। তিনি বলেন, ‘পল্লিবন্ধু  হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ সেনাপ্রধান ছিলেন, নয় বছর রাষ্ট্রপতি ছিলেন। পল্লিবন্ধু যখন ক্ষমতার শীর্ষে ছিলেন, তখন দেশের মানুষ রাষ্ট্রপতির স্নেহের ছোট ভাই জি এম কাদেরকে চিনতেন না। তিনি নিজ যোগ্যতাবলে বড় বড় পদে চাকরি করেছেন। কখনোই দুর্নীতি তাঁকে স্পর্শ করতে পারেনি। যতবার জি এম কাদেরের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হয়েছে, ততবারই তিনি সততার শক্তিতে স্বমহিমায় ঘুরে দাঁড়িয়েছেন।’

গঠনতন্ত্রের ক্ষমতাবলে জি এম কাদের গত সোমবার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, রুহুল আমিন হাওলাদার ও মহাসচিব মো. মুজিবুল হককে প্রাথমিক সদস্যপদসহ সব পদ-পদবি থেকে অব্যাহতি দেন। এর প্রতিক্রিয়ায় গতকাল মঙ্গলবার এই তিন নেতাসহ জাতীয় পার্টির ১৬ জন সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য সংবাদ সম্মেলন করেন।

এর উল্লেখ করে শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, গতকাল একটি সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়েছে, কাউন্সিলে হেরে যাওয়ার ভয়ে নাকি জি এম কাদের কাউন্সিল করছেন না। কাউন্সিলে কারা থাকবেন? তৃণমূল নেতা-কর্মীরাই তো থাকবেন। তৃণমূল নেতা-কর্মীরা ঐক্যবদ্ধভাবে জি এম কাদেরের পাশে আছেন। কাউন্সিলে জি এম কাদেরের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার মতো প্রার্থী কে? নেতা-কর্মীদের পাশে থেকে জাতীয় পার্টিকে আরও এগিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দেন শামীম হায়দার।

তাঁর এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক মীর আব্দুস সবুর আসুদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, আলমগীর সিকদার লোটন, শেরীফা কাদের, মনিরুল ইসলাম মিলন, মো. মমতাজ উদদীন, মইনুর রাব্বী চৌধুরী, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা নুরুল আজহার, খলিলুর রহমান, মনির উদ্দিন, ভাইস চেয়ারম্যান হেলাল উদ্দিন, হুমায়ুন খান, চেয়ারম্যানের প্রেস সেক্রেটারি খন্দকার দেলোয়ার জালালী, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল হান্নান, দপ্তর সম্পাদক মাহমুদ আলম উপস্থিত ছিলেন।

জাতীয় পার্টির ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক মো. সামছুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সদস্যসচিব সুলতান আহমেদ সেলিম। এ সময় মহানগর উত্তরের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

সর্বশেষ