
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সব ধরনের কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে অন্তর্বর্তী সরকার।
শনিবার রাতে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এক বিশেষ সভায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। রাত সাড়ে আটটা থেকে পৌনে ১১টা পর্যন্ত চলা সভা শেষে সংবাদ ব্রিফিংয়ে সিদ্ধান্তগুলো জানান আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।
তিনি জানান, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন সংশোধনের খসড়া অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ। নতুন এই সংশোধনী অনুযায়ী, ট্রাইব্যুনাল এখন কোনো রাজনৈতিক দল, অঙ্গসংগঠন বা সমর্থক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে পারবে।
বিচার চলাকালীন দেশের নিরাপত্তা, সার্বভৌমত্ব রক্ষা, জুলাই আন্দোলনের নেতা-কর্মী এবং ট্রাইব্যুনালের বাদী ও সাক্ষীদের সুরক্ষার স্বার্থে আওয়ামী লীগের সাইবার ও বাস্তব জগতের সব কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত হয়। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পরিপত্র শিগগিরই জারি করা হবে।
সভায় আরও সিদ্ধান্ত হয়, ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ আগামী ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে চূড়ান্ত করে প্রকাশ করা হবে।
এর আগে তিন দিন ধরে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে আসছিল বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সংগঠন ও ছাত্র-জনতা। এমন প্রেক্ষাপটে এই জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়।
১৯৭৩ সালে প্রণীত আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইনের আওতায় এই বিচার প্রক্রিয়া চালানো হচ্ছে। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দলের শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে গণহত্যা, গুমসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে মামলা হয়।
গত নভেম্বরে আইন সংশোধন করে দলীয় পর্যায়ে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার বিধান যুক্ত করে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার। এবার সেই সংশোধনী আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমোদন পেল উপদেষ্টা পরিষদের সভায়।