
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রাদেশিক সরকার প্রতিষ্ঠার প্রস্তাবের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। তবে স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করার ওপর গুরুত্বারোপ করে দলটি কুমিল্লা ও ফরিদপুরকে নতুন বিভাগ হিসেবে ঘোষণা করার পক্ষে মত দিয়েছে। আজ মঙ্গলবার জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে অনুষ্ঠিত এক বর্ধিত আলোচনায় এই মতামত তুলে ধরে এনসিপি। আলোচনা শেষে দলটির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার সাংবাদিকদের জানান, জেলা পরিষদ ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান পদের বিলুপ্তির বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে এনসিপি। তাদের মতে, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ব্যবহার করা হলে সহিংসতা বাড়ে এবং সমাজে নেতিবাচক সাংস্কৃতিক পরিবর্তন ঘটে।
ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচনে জনগণের সরাসরি ভোটের পক্ষে এনসিপি মত দিয়েছে, যা কমিশনের প্রস্তাবিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে নির্বাচনের পন্থার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। নির্বাচন কমিশনের অনিয়ম তদন্তে সংসদীয় কমিটির পরিবর্তে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের মাধ্যমে তদন্তের পরামর্শ দিয়েছে দলটি, যাতে রাজনৈতিক প্রভাব এড়ানো যায়। সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধনে সংসদ সদস্যদের স্বাধীনতার পক্ষে আগের অবস্থানেই অনড় রয়েছে এনসিপি, তবে ভবিষ্যতে আরও আলোচনা করার কথাও বলেছে তারা।
এনসিপি সংসদীয় স্থায়ী কমিটির নেতৃত্বে বিরোধী দলের সদস্যদের অন্তর্ভুক্তির পক্ষে মত দিয়েছে, বিশেষ করে জনপ্রশাসন, সরকারি হিসাব, পরিকল্পনা ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিভাগে। সংবিধান সংশোধনীর ক্ষেত্রে গণভোটের পক্ষে দলটি, তবে শুধু রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা বা জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে এই বাধ্যবাধকতা রাখার প্রস্তাব দিয়েছে।
প্রধান বিচারপতি নিয়োগে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে নির্বাচন এবং রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে সংসদের উভয় কক্ষের পাশাপাশি স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিদের ভোটার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাবেও একমত হয়েছে এনসিপি। আলোচনায় অংশ নেওয়া এনসিপির প্রতিনিধিরা মৌলিক সংস্কারের একটি রূপরেখা তুলে ধরেন, যা কমিশনের পক্ষ থেকে ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করা হয়েছে। কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, এই আলোচনাই ভবিষ্যতের গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের পথরেখা নির্মাণে সহায়ক হবে।