
সকালের নাশতার পর অনেকেরই কফি খাওয়ার অভ্যাস আছে। কেউ কেউ দিনে কয়েক কাপ পর্যন্ত কফি খান। কফির কড়া গন্ধ নিমিষেই শরীর চাঙ্গা করে তুলতে পারে। শরীরের ক্লান্তি কাটাতে, তাৎক্ষণিক শক্তি জোগাতে কফির তুলনা নেই।
কিন্তু কফির মতো একটি অতি উপকারী পানীয়ও কিন্তু সবার জন্য ভালো নয়। কারণ এতে থাকা ক্যাফেইন সবার সহ্য হয় না। এজন্য কিছু ব্যক্তিকে কফি খাওয়া থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।
তাই কারা কফি থেকে বিরত থাকবেন, জেনে নিন—
আইবিএস থাকলে : আইবিএস হলো এক ধরনের জটিল পেটের অসুখ।
এই রোগে ভুক্তভোগীরা প্রায়শই ডায়রিয়া ও কোষ্ঠকাঠিন্যের ফাঁদে পড়েন। আর কফি পান করার পর আইবিএস-এর প্রকোপ আরো বাড়ে। তাই এই অসুখে ভুক্তভোগীদের কফি থেকে দূরত্ব বজায় রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়। বিশেষত, দুধ মেশানো কফি তো এদের পক্ষে প্রায় বিষের সমান।তাই এই বিষয়টি মাথায় রাখা জরুরি।
গ্লকোমা থাকলে : চোখের জটিল অসুখ হলো গ্লকোমা। এই রোগের ফাঁদে পড়লে ধীরে ধীরে ক্ষীণ হতে থাকে দৃষ্টিশক্তি। এই রোগে ভুক্তভোগীদেরও কফি থেকে দূরে থাকতে উপদেশ দেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ গবেষণায় দেখা গেছে, বেশি পরিমাণে ক্যাফেইন গ্রহণ করলে গ্লকোমার সমস্যা দ্রুত গতিতে বাড়তে পারে।তাই সুস্থ থাকতে এই রোগে আক্রান্তদের অবশ্যই কফির থেকে দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
ওভার অ্যাকটিভ ব্লাডার থাকলে : কফির মধ্যে ডাইউরেটিক্স উপাদান রয়েছে। তাই কফি খেলে প্রস্রাবের পরিমাণ বাড়ে। আর এই কারণেই কফি খাওয়ার পর ফাঁপড়ে পড়েন ব্লাডার ডিজিজে ভুক্তভোগীরা। তাদের বারবার প্রস্রাবে দৌড়াতে হয়, দীর্ঘক্ষণ প্রস্রাব ধরে রাখতে পারেন না, এমনকি প্রস্রাব লিক করার আশঙ্কাও থাকে। তাই ওভার অ্যাক্টিভ ব্লাডারের সমস্যা থাকলে আপনাকে অবশ্যই কফি এড়িয়ে যেতে হবে।
অনিয়মিত হৃৎস্পন্দন : অনিয়মিত হৃৎস্পন্দন সমস্যার আরেক নাম অ্যারিদমিয়া। যারা এ সমস্যায় ভোগেন তাদের কফি থেকে দূরে থাকতে বলা হয়। কারণ এই পানীয়তে উপস্থিত ক্যাফেইন হঠাৎ করে রক্তচাপ বাড়িয়ে দিতে পারে। তবে শুধু অ্যারিদমিয়া নয়, যেকোনো ধরনের হৃদরোগ থাকলেই কফি খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
অনিদ্রার সমস্যা থাকলে : যাদের অনিদ্রার সমস্যা আছে তাদেরও কফি খাওয়া ঠিক নয়। এই পানীয়তে উপস্থিত কিছু উপাদান সরাসরি ঘুমের বিঘ্ন ঘটায়। এমনকি অত্যধিক পরিমাণে কফি খেলে ঘুমের সাইকেলও ব্যাহত হতে পারে। এ কারণে বিশেষজ্ঞরা ইনসোমনিয়ায় ভুক্তভোগীদের কফি খেতে বারণ করেন।
উৎকণ্ঠায় ভুগলে : আমাদের মধ্যে অনেকেই সব বিষয়ে টেনশন করেন। আর এই ধরনের মানুষের সমস্যা আরো বাড়িয়ে দিতে পারে কফি। তাই উৎকণ্ঠায় ভুক্তভোগীদের কফি এড়িয়ে যাওয়া ভালো।
গর্ভবতী নারী : গর্ভাবস্থায় কফি না খাওয়াই ভালো। নয়তো মিসক্যারেজ, প্রিম্যাচিওর লেবার থেকে শুরু করে একাধিক সমস্যার ফাঁদে পড়তে পারেন। আর একান্তই যদি গর্ভাবস্থায় এই পানীয়তে চুমুক দেওয়ার ইচ্ছে হয়, তাহলে সবার আগে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। স্তন্যদানকারী মায়েদেরও কফি খাওয়া থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।
এ ছাড়া যারা ইতিমধ্যেই একবার হার্ট অ্যাটাকের ফাঁদে পড়েছেন, তারাও এই পানীয় এড়িয়ে চলুন। তাহলেই সুস্থ-সবল জীবনযাপন করতে পারবেন।